কুমিল্লায় উৎসবমূখর পরিবেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়কর রিটার্ন দিচ্ছেন করদাতারা

প্রথমবারের মতো ৫% রেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ

এমদাদুল হক সোহাগ:
কুমিল্লায় উৎসবমূখর পরিবেশে আয়কর রিটার্ন দাখিল করছেন করদাতারা। এবছর সর্বপ্রথম ৫% স্ল্যাব রেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছে এনবিআর। তাছাড়া একই রেটে অপ্রদর্শিত সম্পদও প্রদর্শন করার সুযোগ রয়েছে। আগামি ৩০ নভেম্বর রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন বিধায় যতই দিন যাচ্ছে করদাতাদের ভির বাড়ছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই করদাতাদের উপচে পড়া ভির দেখা গেছে নগরীর নজরুল এভিনিউ সড়কের কর ভবন প্রাঙ্গনে। তবে স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে টোকেন ও সিরিয়াল ব্যবস্থায় সুশৃঙ্খলভাবে রিটার্ন গ্রহন, ইটিআইএন রেজিস্ট্রেশন, প্রাপ্তি স্বীকারপত্র বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া, তথ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে আয়কর সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা। মহামারী করোনাভাইরাস এর কারণে কুমিল্লা সহ সারাদেশে এ বছর আয়কর মেলা হচ্ছে না। তবে মেলার আদলেই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। রিটার্ন দাখিল ও আয়কর দিতে আসা ইঞ্জিনিয়ার মোদাচ্ছির হোসেন বলেন দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমি আমার রিটার্ন দাখিল করে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র বুঝে পেয়েছি। তবে গতবছর মেলায় ব্যাংকের বুথ করভবনের ভেতরে থাকায় পেঅর্ডার করতে কষ্ট কম হয়েছে। এবছর ব্যাংকের বুথ না থাকায় একটু কষ্ট হয়েছে। বুথ থাকলে সময় আরো কম লাগতো। তবে সর্বোপরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে যে পদ্ধতিতে রিটার্ন গ্রহণ করা হচ্ছে সেটি সন্তোষ জনক। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্টার দলিলুর রহমান বলেন, কর অঞ্চল কুমিল্লার এবছরের সেবাদান কার্যক্রম প্রশংশনীয়। মেলা না হলেও করদাতাদের বসার জন্য সামিয়ানা টানিয়ে চেয়ার টেবিল সহ টোকেনের মাধ্যমে সিরিয়াল মেনটেইন করে সেবা দিচ্ছেন। আমরা সহজে রিটার্ন দাখিল করতে পেরে আনন্দিত।

কর অঞ্চল- কুমিল্লার উপ কর কমিশনার, সদর দপ্তর (প্রশাসন) জনাব মোঃ আরিফুল হাসান মজুমদার বলেন, কুমিল্লায় কর ভবনে জেলার প্রায় ১৪ হাজার ১৫০ জন মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সেবা গ্রহণ করেছেন। কর অঞ্চল কুমিল্লার ৬ টি জেলায় মোট এক লাখ দশ হাজার ১৫০ জন করদাতা সেবা গ্রহণ করেছেন। কতটাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে সেটি মেলা শেষে জানা যাবে।

কর অঞ্চল কুমিল্লার কমিশনার জনাব মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। দেশের উন্নয়নে রাজস্ব অনকে গুরুত্বপূর্ণ। ২০১০ সাল থেকে দেশব্যাপী প্রতি বছর আয়কর মেলা হলেও এবছর মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। তবে করদাতা ও সেবাগ্রহীতাদের সুবিধার্থে সেবা মাস নভেম্বরে মেলার পরিবেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়কর রিটার্ন গ্রহণ, ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন, আইনি সেবা সহ কর তথ্যসেবা এবং তাৎক্ষণিক প্রাপ্তি স্বীকার পত্র প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, অর্থ আইন, ২০২০ মোতাবেক সকল টিআইএনধারীর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক এবং শুধুমাত্র কোম্পানি করদাতা ব্যতীত অন্য সকল করদাতার রিটার্ন দাখিলের সর্বশেষ সময় ৩০ নভেম্বর। কর ভবন প্রাঙ্গণে করদাতাগণ রিটার্ন দাখিল ছাড়াও রিটার্ন ফরম, চালান ফরম প্রাপ্তি এবং টিআইএন গ্রহণ করতে পারছেন। তিনি আরো বলেন, অর্থ আইন, ২০২০ এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ৫% স্ল‌্যাব রেটে কর প্রদানের সুবিধা এবং অপ্রদর্শিত জমি, দালান, অ্যাপার্টমেন্ট এবং বিনিয়োগকৃত অর্থ নির্দিষ্ট হারে কর প্রদানের মাধ্যমে প্রদর্শন করার সুযোগ প্রদান করা হয়েছে। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সময়মতো রিটার্ন দাখিল করে কর অঞ্চল কুমিল্লার সেবা গ্রহণ করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।

Post Under