এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
দলিল রেজিস্ট্রি হবার প্রায় এক বছরেও সাহাব উদ্দিন আহমেদ পাননি নকল। সাধারণত ২/৩ দিনের মধ্যেই সহিমোহরী নকল মিলে। উপরন্তু তার নামে রেজিষ্ট্রিকৃত জমি হচ্ছে বেহাতের উপক্রম! নকল আটকে রেখে আরেকটি দলিল সৃজন করে চলছে তাতে স্বাক্ষর নেয়ার অপচেষ্টা চলছে। আর এসবকিছুই করছেন স্বয়ং সাব রেজিষ্টার।স্থানীয় এ.কে.এম মোমেন আলী নামে একজনের পক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের সাব রেজিষ্টার মিজাহারুল ইসলামের এহেন চেষ্টায় আদালতে চিরন্তন নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা হয়েছে। এতে সাব রেজিষ্টার এবং মোমেন আলীকে বিবাদী করা হয়। দলিলের নকল সরবরাহ না করায় লিগ্যাল নোটিশও পাঠানো হয়েছে সাব রেজিষ্টারকে।
সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে ৬ আগষ্ট দায়েরকৃত নিষেধাজ্ঞার মামলা, ৮ আগষ্ট প্রদত্ত লিগ্যাল নোটিশ সুত্রে জানা যায়, নাসিরনগরের গুনিয়াউক গ্রামের এ কে এম মাহফুজ আলী তার মালিকানাধীন গুনিয়াউক মৌজার বিএস ৯৮৪ দাগের ১ একর ৯০ শতক ভূমি থেকে তার ছোট ছেলে এ.কে.এম মঈন আলীকে বিগত ১৯৯৫ সালের ২ জুলাই ২০ শতক সাফ কাবলা (২২৬৭ নম্বর) দলিল করে দেন। মঈন আলী তার মালিকানাধীন ওই ২০ শতক জায়গা থেকে ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর ৬১৯৩ নং এওয়াজ দলিলমূলে মো. সাহাব উদ্দিন আহমেদকে সাড়ে ৩ শতক ভূমির মালিকানা দখলার্পণ করেন। এরপর সাহাব উদ্দিন সেখানে মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরু করেন। সাহাব উদ্দিন অভিযোগ করেন, তিনি সহিমোহরী নকল সংগ্রহের জন্যে সাব রেজিষ্টার বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু নকল সরবরাহ না করে সাব রেজিষ্টার মো. মিজাহারুল ইসলাম তাকে অফিসে ডেকে নিয়ে নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। সাহাব উদ্দিনের মালিকানাধীন ওই সাড়ে ৩ শতক ভূমি ‘ওয়াকফ আল আওলাদ’ দলিল করে দেয়ার জন্যে চাপ সৃষ্টি করেন এবং সাব রেজিষ্টারের সৃষ্ট ওই দলিলের একটি কপি তাকে সরবরাহ করেন। এতে তিনি হতভম্ব হয়ে যান। এছাড়া তাকে টেলিফোনেও ভয়ভীতি দেখানো হয়। সাহাব উদ্দিন জানান, এ.কে.এম মাহফুজ আলীর প্রথম স্ত্রীর সন্তান এ.কে.এম মোমেন আলীর সঙ্গে যোগসাজসে সাব রেজিষ্টার তার ভূমি কেড়ে নেয়ার এই পায়তারা করছেন। সাব রেজিষ্টার মো. মিজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আছে আরো অনেক অভিযোগ। গত বছরের ২৬ নভেম্বর নাসিরনগর সাব রেজিষ্টার কার্যালয়ে হওয়া একটি জাল দলিল নিয়েও আদালতে মামলা হয়েছে। এবছরের ২৩ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এই মামলাটি করেন উপজেলার কুণ্ড ইউনিয়নের মুছলেন্দপুর গ্রামের সারবানু বিবি। তার অভিযোগ, মামলার আসামীরা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে মালিক সেজে তার ৫ শতক ভূমির দলিল সম্পাদন করে নিয়েছেন। করোনা ভাইরাস বিস্তার প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সহযোগিতা না করার কারনেও উপজেলা প্রশাসন সতর্ক করে সাব রেজিষ্টার মো. মিজাহারুল ইসলামকে। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাব রেজিষ্টারের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।