নিজস্ব প্রতিবেদক:
পুরো রমজান মাস ধরে গরীব অসহায় ও পদচারীদের মাঝে ইফতার বিলিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকার এক যুবক। তিনি কুমিল্লা ডায়াবেটিক হাসপাতালের ক্যাশ কাউন্টারের সহকারী ইনচার্জ মো: সুজন।
প্রতিদিন প্রায় ৫০ জন মানুষের ইফতার বিলিয়েছেন তিনি। বাগিচাগাঁও উইন্ড কনভেনশন হলের পাশের তিন রাস্তার মোড়ে প্রতিদিন চেষ্টা গ্রুপের ব্যানারে ওই ইফতার বিতরণ করা হয়। কোন কোন দিন আরো বেশী ইফতার বিতরণ হয়েছে। ডিম খিচুরী, মুড়ি, বেগুনী, ছোলা, আলুর চব দিয়ে বানানো প্যাকেট তুলে দিয়েছেন অসহায় মানুষের হাতে।
তাছাড়া কুমিল্লার তিনটি এতিমখানার প্রায় তিনশো এতিম শিশুকে কনভেনশন হলে বসিয়ে ইফতার করিয়েছেন। চেষ্টা, বন্ধুদের সাথে, মানুষের পাশে এই স্লোগানকে ধারণ করে মাসব্যাপী এই চলা ইফতার বিতরণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষ উদ্যোক্তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
চেষ্টার ফেইসবুক পোস্টের নিচে মির্জা শামিম লিখেছেন, এই মহতি উদ্যোগকে আল্লাহ কবুল করুক। এ আর রবিন লিখেছেন মাশাল্লাহ আল্লাহ পাক আপনার মহৎ কাজকে কবুল করুক। তাছাড়া সুজনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে এলাকা সহ বিভিন্ন মহলের দরদি ব্যক্তিরা এগিয়ে এসে চেষ্টা গ্রুপের কাজকে আরো বেগবান করেছেন। একেকদিন একেকজন ঈফতার বিতরণের খরচ বহন করেছেন।
মো: সুজন বলেন, ২০১৯ সালে ভারতের দার্জিলিংয়ে ঘুরতে গিয়ে আমি মানুষের জন্য কাজ করার অনুপ্রেরণা পাই। সেখানে একদিন ভুলে টাকা হোটেলে রেখে বের হয়ে যাই। গাড়ি রিজার্ভ নিয়ে পর্যটন স্পটে যাওয়ার পথে খাবারের রেস্টুরেন্টে খাওয়ার পর দেখি পকেটে মানিব্যাগ নেই। বিল এসেছিল ১৬০০ রুপি। আমার অহায়ত্ব প্রকাশ করে রেস্টুরেন্ট ম্যানেজারকে হোটেলে ফিরে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে সহযোগিতা চাইলে তিনি আমার অসহায়ত্ব দেখে পুরো বিলই মাফ করে দেন। সেই থেকেই আমি প্রতিজ্ঞা করি মানুষের জন্য কাজ করার জন্য। সেখান থেকে ্এস আমি বিভিন্ন সময় এতিমখানার শিশুদের খাবারের ব্যবস্থা করেছি।
এই রমজানে আমার বেতনের দশ হাজার টাকা নিয়ে আমার যাত্রা শুরু হয়। আমার মায়ের সহযোগিতায় আমি বেশিরভাগ সময়েই ডিম খিচুরী বিতরণ করেছি। আমার আম্মা প্রতিদিন ৫০জনের ডিম খিচুরি রান্না করে দিয়েছেন। তাছাড়া, আমার এই উদ্যোগে আমার পরিচিত বন্ধু-বান্ধব, বড় ভাইয়েরা আমার পাশে থেকে উদ্যোগকে সফল করেছেন। সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।