এমদাদুল হক সোহাগ, কুমিল্লা
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, শর্টগানের গুলি, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ি শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে মহাসড়ক অবরোধের জন্য বের হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর পাশে সালমানপুর আনসার ক্যাম্পসংলগ্ন রাস্তায় পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা পুলিশের সাথে শুরুতে তর্ক, ধাক্কা-ধাক্কি ও ব্যারিকেড ভাঙ্গার চেষ্টার সময় এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশ টিয়ারশেল, ফাকা গুলি, লাঠি চার্জ করে, শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ইট পাটকেল নিক্ষেপে অন্তত ২৫ জন শিক্ষার্থী, দুজন ক্যাম্পাস সাংবাদিক এবং পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ শুরুতে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিলেও সহপাঠীদের উপর হামলার খবরে অল্প সময়ে শত শত শিক্ষার্থী এসে আবার বিক্ষোভ শুরু করেন, তারা পুলিশকে উদ্দ্যশ্য করে ভূয়া ভূয়া, ঘোষখোর ঘোষখোর স্লোগান দিতে থাকেন।
এসময় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: নাজমুল হাসান বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত হওয়ার আহবান জানান। তিনি বলেন আমরা কারো দুশমন নাহ। মহাসড়ক অবরোধ করা যাবেনা। এতে দেশের বিশাল ক্ষতি হয়। জনগনের দুর্ভোগ হয়। তার বক্তব্যও শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে পারেনি।
পরে নারী শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ মিছিলের সামনে এসে ব্যারিকেড ভেঙ্গে মহাসড়কের দিকে হাটতে থাকেন। অল্প সময়ের মধ্যেই লাঠিসোঠা সহ মিছিল নিয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকা অবরোধ করেন। সেখানেও পুলিশের সাথে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশকে লক্ষ করে গালাগালি, স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে পুলিশকে লক্ষ করে তারা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন, সেসময় বিশ্ববিদ্যালেয় প্রক্টর সহ কয়েকজন শিক্ষক-ছাত্র তাদের নিবারন করেন। পরে শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিলো। এদিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভিাগসূত্রে জানা যায়, সেখানে ১১জন শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় গিয়েছে। তাদের সাত জনকে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকীদের চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।