কুমিল্লায় জিল্লুর হত্যাকান্ডে তিন নেতাকে জড়ানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার,সুষ্ঠ তদন্ত ও যথাযথ মামলা দায়েরের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুমিল্লায় আলোচিত জিল্লুর হত্যাকান্ডে দায়ের করা মামলায় কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মো: জহিরুল ইসলাম রিন্টু ও আদর্শ সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহমেদ নিয়াজ পাভেল কে আসামি করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার বেলা সোয়া ১১টায় কুমিল্লা ক্লাবের ৫ম তলার মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ, কুমিল্লা মহানগর যুবলীগ ও কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারিকুর রহমান জুয়েল, কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর আল আমিন সাদী ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান পিয়াস।

বক্তব্যে তারা জানান, গত ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৪৮-তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন ছিল। ওইদিন কুমিল্লা মহানগরীর ২৫ নং ওয়ার্ডের পুরাতন চৌয়ারা বাজার এলাকায় জিল্লুর রহমান চৌধুরী জিলানী নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। যা খুবই বেদনাদায়ক, ঘৃণ্যকর একটি ঘটনা। কুমিল্লা মহানগর আ’লীগ, মহানগর যুবলীগ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষ থেকে এই হত্যাকা-টির তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করা হয়।

তারা বলেন, রাজনৈতিকভাবে আমরা হত্যা, চাঁদাবাজ, মাদক ও কলহের বিরুদ্ধে। অথচ একটি ষড়যন্ত্রকারি যারা সব সময় স্বাধীনতাবিরোধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে থাকে, তারাই মহানগর আওয়ামী লীগের কর্ণধার ও মহানগর যুবলীগ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও আর্দশ সদর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে কলুষিত করার জন্য জিল্লুর হত্যাকন্ডে জড়িত করেছে।

মামলার ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আসামী করা হয়েছে মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিন্টু ও আদর্শ সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহমেদ নিয়াজ পাভেল কে। কেন্দ্রীয় যুবলীগের নির্দেশনা অনুযায়ী সপ্তাহ খানিক ধরে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত সময় কাঁটান যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ। হত্যাকা- সংঘটিত হওয়ার সময় আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ ভোর থেকে নেতাকর্শীদের নিয়ে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসে যুবলীগের প্রতিবার্ষিকীর নানান আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। অথচ এই নির্দোষ ব্যক্তিকে হত্যা মামলার আসামী করা হয়েছে অন্যায়ভাবে।

 সংবাদ সম্মলনে উপস্থিত কুমিল্লার কর্মরত সাংবাদিকদের একাংশ।

উক্ত ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় জড়িত করা নেতৃবৃন্দসহ যারা মামলার বিষয়ে নানা রকম কুটকৌশলে লিপ্ত সকলের মোবাইল ট্র্যাকিং ও ভয়েস রেকর্ড সংগ্রহের মাধ্যমে উক্ত ঘটনায় প্রত্যেকের অবস্থান ও তাদের সম্পৃক্ততা নিরূপণের জোর দাবি জানাচ্ছি।

তারা আরও জানান, হত্যা রাজনীতিতে সেরা পরিবারই আফজল খান পরিবার। তারা আজ ষড়যন্ত্রের খেলায় মেতে উঠেছে। আমরা সন্দেহ করছি হত্যা মামলা সৃষ্টি করে রাজনীতির ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টায় কেউ জিল্লুর হত্যাকা- ঘটাতে পারে। কারণ হত্যাকান্ডটি ঘটেছে সকাল সাড়ে ৭ টায়। তাকে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিসকেরা মৃত ঘোষণার পর প্রায় সাথে সাথেই কান্দিরপাড়ে ইমরান খানের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক ডিজিটাল ব্যানারসহ একটি মিছিল করে। এতেই বিষয়টি পূর্ব পরিকল্পিত বলে প্রতীয়মান হয়।
লিখিত বক্তব্য পাঠর করে, তারিকুর রহমান জুয়েল উপস্থিত সাংবাদিকদের আরো বলেন, আফজল খান ও তার ছেলে-মেয়ে খুনী এবং সন্ত্রাসীদের আশ্রয় ও প্রশ্রয়দাতা। বিগত সময়ে তারা বেশ কয়েকটি হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। তাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ শংকর, হামিদ, টিটু, জালাল, সাইফুল হত্যাকান্ডসহ নানা অপকর্মে জড়িত। ইমরান খান হত্যা ও অস্ত্র মামলায় জড়িত ছিলেন এবং অস্ত্র মামলায় ২০০৭ সালে ২০ বছরের কারাদন্ড প্রাপ্ত হন। কুমিল্লা শহর ছাত্রলীগের সভাপতি এম সাইফুল ইসলাম প্রধানের হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারি ও প্রধান আসামী এই ইমরান খান। আফজল খানের ছেলে আরমান খান দেবিদ্বার পৌর যুবলীগের সহ-সভাপতি টিটুকে বন্ধুত্বের সুযোগে হত্যা করে নগরীর ঠাকুরপাড়ার পরিত্যক্ত বাড়ির সেফটি ট্যাংকে গুম করে।
মামলা দায়েরের প্রায় ১৪ ঘন্টা আগে ইমরান খান প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনে মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদের নাম উল্লেখপূর্বক নানা প্রকার মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করে যা ষড়যন্ত্রের নীল নকশা বলে প্রমাণিত হয়। এছাড়া মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জহিরুল হক রিন্টু ও আর্দশ সদর উপজেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহমেদ নিয়াজ পাভেলকে এই হত্যাকান্ডে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়িয়েছে, যা অবশ্যই নিন্দনীয়।

আমরা নিহত জিল্লুর রহমান জিলানীর হত্যাকান্ডের সঠিক তদন্ত চাই। প্রশাসন, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের প্রতি সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি আপনারা এই হত্যাকান্ডের মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার ও যথাযথ মামলা দায়ের এবং সঠিক তদন্ত করে মূল ঘাতকদের চিহিৃত করুন। আমরা এই হত্যাকান্ডের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচার দাবি করছি। প্রশাসনের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। আশা করি হত্যাকান্ডের সঠিক রহস্য উন্মোচন হবে।

সংবাদ সম্মলনে কুমিল্লায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দসহ সদর আওয়ামী লীগ, মহানগর যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Post Under