গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যা : গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকারোক্তি

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর স্ত্রী বাজার করতে গিয়ে নিখোঁজের পর ঝোপ থেকে লাশ উদ্ধার ঘটনার রহস্যজট খুললো দুই দিন না পেরুতেই। দুই যুবক মিলে পালাক্রমে ধর্ষণের পর টাকা-মোবাইল ফোন লুটে নিয়ে গলায় কাপড়ের বেল্ট প্যাঁচিয়ে গৃহবধূ রহিমা বেগমকে (৪৫) হত্যা করে লাশ ফেলে রাখে পুকুরপাড়ের ঝোপে। মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে পর্যায়ক্রমে গ্রপ্তারের পর স্বীকারোক্তিতে ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন আরশাদুল ইসলাম ও সালাউদ্দিন নামের দুই যুবক।
সোমবার (৮ মার্চ) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহিদুল ইসলামের আদালতে সোপর্দের পর তারা ১৬৪ ধারায় এই স্বীকারোক্তি প্রদান করে। স্বীকারোক্তি প্রদানকারীরা হলেন জেলার বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের গিলামুড়া গ্রামের দুলাল মিয়ার পুত্র আরশাদুল ইসলাম (১৭) পার্শ্ববর্তী হরষপুর ইউনিয়নের নিদারাবাদ গ্রামের আলাউদ্দিনের পুত্র সালাউদ্দিন(১৫)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, গত ৬ মার্চ শনিবার সকালে জেলার বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের জালালাপুর গ্রামের পুকুরপাড়ের ঝোপ থেকে থেকে গলায় কাপড়ের বেল্ট প্যাঁচানোবস্থায় গৃহবধূ রহিমা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগেরদিন শুক্রবার বিকেলে বাজার করার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হবার পর নিখোঁজ হয় জালালপুর গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সহিদ মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম। তার মেয়ে একাধিকবার ফোন করেও মায়ের ফোন বন্ধ পায়। পরদিন সকালে রহিমার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।এদিকে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত রোববার সন্ধ্যার দিকে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার আসামপাড়া গুচ্ছ গ্রামের ফজার আলীর বাড়ি থেকে গিলামুড়া গ্রামের আরশাদুলকে ও তার দেয়া তথ্যমতে নিদারাবাদ গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে সালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে বিজয়নগর থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর প্রথমে তারা পুলিশের কাছে এবং পরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এতে তারা গৃহবধূ রহিমা বেগমকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন লুটে নিয়ে গলায় কাপড়ের বেল্ট প্যাঁচিয়ে হত্যা করার বিবরণ দেয়। পরে আদালত তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছেন।
বিজয়নগর থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. আতিকুর রহমান বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজনের সাথে ওই মহিলার পূর্ব থেকেই পরিচয় ছিলো। সেই সুবাদে তারা ওই মহিলাকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর রহিমার কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার জন্য তাকে হত্যা করে লাশ পুকুরপাড়ের ঝোপে ফেলে দেয়।
Post Under