এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
জামায়াতের আমীর তাজুল ইসলাম পেলেন ‘মুক্তিযোদ্ধা গণসংবর্ধনা’! আওয়ামী লীগ দলীয় ইউপি চেয়ারম্যান আয়োজিত এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হন আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা আক্তার (শিউলী আজাদ)।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়ন এলাকায় অনুষ্ঠিত ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নিয়ে চলছে তোলপাড়। ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে। স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা তার ফেসবুুক স্ট্যাটাসে ঘটনাটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, গত শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) এই শরীফপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর তাজুল ইসলামকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সংবর্ধনা দেয়া হয়। শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফ উদ্দিন চৌধুরী সভাপতিত্বে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তরুণ শিল্পপতি মো. বিল্লাল ভূইঁয়া। এতে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ডা. ফয়েজ আহমদ ফুল মিয়া, এ.কে.এম ছাদির, মো. ছানাউল্লাহ, তাজুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান হাফ মিয়া, ইউপি সদস্য মো. ইকবাল হোসেন, ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোজ্জামেল হক তপন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন, মানিক রায় ভৌমিক, উপজেলা যুবলীগের সদস্য মো. সাজিদুল ইসলাম সাচ্চু মাস্টার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জামায়াত নেতার সাথে শরীফপুর ইউনিয়নের অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদেরও সংবর্ধনা দেয়া হয়। সংবর্ধিত মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রয়াতদের পরিবারের হাতে ক্রেস্ট ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
জানা যায়,এই ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম রয়েছে ৭৪ জনের। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৪৩ জন। স্থানীয়রা জানান, সংবর্ধনার আয়োজক শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন চৌধুরী বেশ কয়েক বছর আগে বঙ্গবন্ধুর ছবি প্রকাশ্যে ছেঁড়ার অপরাধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আসামী হন। ওই মামলা থেকে বাচঁতে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।শরীফপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ শরীফ হোসেন বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক জামায়াত নেতাকে গণসংবর্ধনা দেয়ার ঘটনা নিন্দনীয়। এঘটনায় সর্বত্র সমালোচনা হচ্ছে। এই অনুষ্ঠানের ব্যাপারে চেয়ারম্যান আমাদের কিছু বলেননি। জনগণের তেমন কোন সম্পৃক্ততা ছিলনা অনুষ্ঠানে। সেখানে তার পরিষদের কিছু সদস্য ও নিজেদের লোক নিয়েই মূলত অনুষ্ঠানটি করেছেন। এম.পি শিউলি আজাদ এখানে এসেছেন, তিনিও আমাদেরকে কিছু জানাননি। জনপ্রতিনিধিদের আচরণ এমন হওয়া উচিৎ নয়।’
স্থানীয় শরীফপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা ফাইজুর রহমান তার ফেসবুকে এঘটনার সমালোচনা করে লিখেছেন-‘নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক জামায়াতের আমিরকে সংবর্ধনা। উনি ( চেয়ারম্যান) প্রকাশ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা হয়। পরে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে মামলা শেষ করে আওয়ামীলীগে যোগ দেয়। শরীফপুর ইউপি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।