তারা আজ ক্রেতা বিহীন বিক্রেতা

কাতিব হাসান মুরাদ, কুবি প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সামনের ফটোকপির দোকানগুলোর চলছে বেহাল দশা। বন্ধ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী না থাকায় আগের মতো ভিড় জমছে না দোকানগুলোতে।

করোনা পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট পরীক্ষা নেয়া শুরু করেছিলো। সেই সুবাদে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা বাড়ার সাথে সাথে চলতে শুরু করেছিলো ফটোকপির মেশিনগুলো। এ যেন ভাগ্যের চাকা বদলের অনন্য সুযোগ। কিন্তু না পরিস্থিতি খারাপের সাথে সাথে আসলো বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষনা।

দীর্ঘদিনের অচল মেশিনগুলো সচল করার জন্য দোকানদারদের গুনতে হয়েছিলো বড় অঙ্কের টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় পুনরায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আবারো অকেজো হওয়ার পথে এই মেশিনগুলো।

মুন্সী ফটোকপি দোকানের মালিক নজরুল ইসলাম রাজু মুন্সী আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘অনেক টাকা ধার করে আমি কম্পিউটার এবং ফটোকপির মেশিনগুলো ঠিক করেছিলাম। ভেবেছিলাম বিক্রি স্বাভাবিক হলে টাকা শোধ করে দিবো। কিন্তু ক্যাম্পাস আবার বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য যেখানে দোকানের বিদ্যুত বিল দিতে হিমশিম খাচ্ছি সেখানে ঋণ পরিশোধ তো অনেক দূরের কথা। মেশিনগুলো আবারো নষ্ট হচ্ছে। হয়তো ভারী ঋণের বোঝা আরো বইতে হবে।’

মজুমদার ফটোকপির দোকানি সন্তোষ চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘এই দোকানটি হচ্ছে আমার পরিবারের আয়ের উৎস। দীর্ঘদিন বন্ধের পর যা সঞ্চয় ছিলো সব শেষ। বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন শিক্ষার্থীরা আসা শুরু করেছিলো তখন আমি অতীত ভুলে গিয়ে পুনরোদ্দমে কাজ শুরু করেছিলাম। ভেবেছিলাম আর পিছু ফিরে তাকাতে হবে না। কিন্তু এখন আমি আর আমার পরিবার একমাত্র সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা করে বেঁচে আছি, জানি না কেউ পাশে দাঁড়াবে কি না।’

উল্লেখ্য, স্বাভাবিক সময়ে এই সব ফটোকপির দোকানদাররা সবসময় কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। এমনকি দোকানভেদে এক দুই জন কর্মচারী ও রাখা হতো। আজ দোকানগুলোর অধিকাংশই বন্ধ, যেগুলো খোলা আছে তারা এখন ক্রেতা বিহীন বিক্রেতা।

Post Under