বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরকারীদের ক্ষমা করবে না রাষ্ট্র ও সাধারণ জনগণ-আইনমন্ত্রী

কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরকারীদের ক্ষমা করবে না রাষ্ট্র ও সাধারণ জনগণ। দেশের প্রচলিত আইনে তাদের বিচার করা হবে। বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) ১১ টায় কসবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রধান অতিথি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুর করা মানে আমাদের বুকে আঘাত করা। আমরা এটা সহ্য করব না। দেশের জনগণ সহ্য করবে না। আমরা তাদেরকে পরিস্কার বলে দিতে চাই এসব অপপ্রচার বন্ধ করেন, তা নাহলে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। তখন আপনাদের কেউ ক্ষমা করবে না।
আইনমন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৭২ সালে পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেশে ফিরে আসেন। ধ্বংসস্তুপ থেকে দেশের উন্নয়নের পথে চলা শুরু হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মর্মান্তিক হত্যার পর উন্নয়নের ধারা শেষ হয়ে যায়। স্বৈরাচারী সরকারগুলো দেশকে ভিক্ষুকের দেশ, স্বৈরতন্ত্রের দেশ, আইনের শাসনবিহীন দেশে পরিণত করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সারা বিশে^ বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করা।
জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের হাল ধরেন। তার নেতৃত্বে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত আছে। যেই বাংলাদেশ সারাবিশে^র কাছে একদিন ভিক্ষুকের দেশ, তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ, একটা ঝড়-বৃষ্টির দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। সেখান থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সারাবিশে^ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করেছেন। স্বাধীনতার এই ৪৯ বছরের মধ্যে তার নেতৃত্বে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছেন। বাংলাদেশের মানুষের অর্থায়নে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। খালেদা জিয়া ও একাত্তরের পরাজিত শক্তি মুজাহিদ-নিজামীরা বাংলাদেশকে প্রায় ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। সেখান থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে নি¤œ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছেন এবং ৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশের জনগণ শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের কারনে নিজের পায়ে দাড়াতে শিখেছে।
যারা ১৯৭১ সালে পরাজিত হয়েছিল তারা ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চেষ্টা করেছিল কিভাবে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করা যায়, কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধুলিসাৎ করা যায়, কিভাবে বাংলাদেশের মাটি থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা হয়। তাদের এ অপচেষ্টা জননেত্রী শেখ হাসিনার কারনে ব্যর্থ হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুকে ১৫ আগষ্ট হত্যার পরও বঙ্গবন্ধু ১৭ কোটি মানুষের হৃদয়ে, স্বপ্নে অবস্থান করে, সোনার বাংলার সম্পূর্ণ মানচিত্রে অবস্থান করে। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেও সফল হয়নি। তারা জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে পারে নাই, উন্নয়ন ব্যহত করতে পারে নাই। তারা কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র বন্ধ করে নাই। তাদের সম্পর্কে জনগণকে সজাগ থাকতে হবে।
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদুল কাওসার ভূইয়া, কসবা পৌরসভার মেয়র এমরান উদ্দিন, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা সিদ্দিকী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাছিবা খান, কসবা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ লোকমান হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম আহŸায়ক এম. জি হাক্কানী, কাজী আজহারুল ইসলাম, রুহুল আমিন ভূইয়া বকুল, যুবলীগ সভাপতি এম এ আজিজ, সাধারণ সম্পাদক মো. সফিকুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগ আহŸায়ক আফজাল হোসেন রিমন, যুগ্ম আহŸায়ক কাজী মানিক, আশরাফুল ইসলাম, জন প্রতিনিধি, মুক্তিযুদ্ধা, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ৬০ জন পরিবারের মাঝে সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরন করা হয়।
মোহাম্মদ শাখাওয়াৎ হোসাইন, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি, ১৬/১২/২০২০

 

Post Under