বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করে তাদেরকে প্রতিহত করুন। -কসবায় আইনমন্ত্রী

কসবা ( ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হচ্ছে জনগণের সেবা করা, জনগণের পাশে থাকা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হচ্ছে জনগণের দুঃখকষ্ট বুঝা ও দেখা। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে থাকবে। কোন ষড়যন্ত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে জনগণের কাছ থেকে আলাদা করতে পারবে না। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করে তাদেরকে প্রতিহত করুন। সোমবার (২৪ জুন) দুপুরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে কসবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়নে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত কেক কাটা, আলোচনা সভা ও দোয়ার অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য আনিসুল হক এসব কথা বলেছেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ বিশ^াস করে জাতীর পিতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ। কারন এই আওয়ামী লীগের অনেক কর্মী মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ দিয়েছেন। তারা সেদিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। আমরা তাদের রক্তদানকে বৃথা যেথে দেব না। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে কেউ ধুলিসাৎ করতে চাইলে শক্তহাতে প্রতিরোধ করব। আমাদের প্রতিরোধের ভাষা হবে জনগণের উপকার করা, জনগণের পাশে থাকা। আমাদের প্রতিরোধের ভাষা হবে জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের কথা বলা। এটাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, এটাই আজকের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আদর্শ। আমি আপনাদেরকে সেই আদর্শে উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন্য আহŸান জানাচ্ছি।

তিনি উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আপনারা জানেন ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। এর একটি হচ্ছে ইন্ডিয়া আর একটি হচ্ছে পাকিস্তান। আশা করা হয়েছিল পাকিস্তানের পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান সমান মর্যাদা পাবে। দুঃখজনক হলেও সত্য পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর আমরা দেখেছি যেই স্বপ্ন নিয়ে পাকিস্তান স্বাধীন হয়েছিল সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে পশ্চিম পাকিস্তানের নেতৃবৃন্দ মোটেও ইচ্ছুক ছিলেন না। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই দিন বুঝেছিলেন এই পাকিস্তান দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের কোন উপকার হবে না। তিনি উদ্বুদ্ধু করেছিলেন মানুষকে তাদের অধিকার ও স্বাধীকার এর ব্যাপারে। তিনি গ্রামে গঞ্জে গিয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধু করেছেন তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করতে।
আমরা দেখেছি পাকিস্তান আমলে দুই দুইটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করেন সেই সরকারকে কিন্তু বেশিদিন টিকতে দেয় নাই পাকিস্তানের সামরিক এবং রাজনৈতিক জনতা। যখন দেখেছে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে দাবিয়ে রাখা যাবে না তখন আইয়ুব খানের মাধ্যমে মার্শল ল দেওয়া হয়েছে। মার্শাল ল এর সময় সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের স্বীকার হয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তবুও তিনি হাল ছাড়েন নাই। তিনি প্রমাণ করেছেন তার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে, জীবনে ত্যাগ স্বীকার করে তিনি প্রমাণ করেছেন এই আওয়ামী লীগ হচ্ছে জনগণের রাজনৈতিক দল। এই আওয়ামী লীগ হচ্ছে জনগণের অধিকার আদায়ের প্লাটফর্ম, জনগণের কথা বলার প্লাটফর্ম। তিনি আওয়ামী লীগের প্রথমে জেনারেল সেক্রেটারী পরবর্তীতে সভাপতি হয়ে এই আওয়ামী লীগকে জনগণের রাজনৈতিক দল হিসেবে দাড় করিয়েছেন।
তিনি আওয়ামী লীগকে তৈরী করেছিলেন বাংলার মানুষকে অধিকার ও স্বাধীকারের কথা বলার জন্য। আওয়ামী লীগকে তৈরী করেছিলেন বাংলার মানষকে মুক্ত করার জন্য এবং সেইভাবেই তিনি তার রাজনীতি এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
আপনারা দেখেছেন অনেক দল বিলুপ্ত হয়ে গেছে। মুসলিম লীগ কিন্তু নাই। আওয়ামী লীগ থেকে যেসব নেতা আলাদা দল করেছিলেন একটাও কিন্তু নাই। আপনারা দেখেছেন যখন জিয়াউর রহমান মারা গেছে তখন বিএনপি চার টুকরা হয়ে গেছে।
আপনারা দেখেছেন আওয়ামী লীগ এর উপর অত্যাচার, নিপীড়ন ও রাজনৈতিভাবে বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা। কোনটাই কিন্তু আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করতে পারে নাই। আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কর্মীদেরকে কখনই কিন্তু কোন সরকার দমায়ে রাখতে পারে নাই। আমরা দেখেছি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরও আওয়ামী লীগকে দমিয়ে রাখতে পারে নাই। আওয়ামী লীগের সকল কর্মী প্রত্যেকেই বঙ্গবন্ধুর রক্ত বুকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে এগিয়ে গেছে। ১৯৮১ সালে দেশে আসার পর জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগের সকল কর্মী গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করেছে। আমরা দেখেছি ২০০৭ সালে যখন ১/১১ হল তখনো আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মীদের দমিয়ে রাখা যায় নাই। যখন মাইনাস টু, মাইনাস ওয়ান ফর্মূলা হল তখনো কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের কর্মীরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে বাংলাদেশে। বিএনপি-জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালীন যখন বাংলাদেশের ভাগ্য উন্নয়নের কোন চেষ্টা করা হয় নাই এবং বরঞ্চ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে পরিচিত করার সকল চেষ্টা চলছে, তখনো জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই আওয়ামী লীগ কর্মীরাই তাদের সকল শক্তি দিয়ে আওয়ামী লীগকে ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী করেছে। আমরা দেখেছি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করতে। আমরা দেখেছি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ । জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন। আজকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫ তম জন্ম বার্ষিকী। আজকে আমাদের জন্য বিরাট আনন্দের দিন।

কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও কসবা পৌরসভার মেয়র মো. গোলাম হাক্কানীর সভাপতিত্বে এবং কসবা পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম ও পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক রুস্তম খাঁর সঞ্চালনায় বিশেষ অথিথি ছিলেন, নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি ছাইদুর রহমান স্বপন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদুল কাওসার ভুইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি কাজী মো. আজহারুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ভুইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সোহাগ, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদা সুলতানা সুপ্রিয়া, কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র এমরান উদ্দিন, উপজেলা পরিষদ সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ছিদ্দিকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ সদস্য রুমানুল ফেরদৌস, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহীদুল্লাহ, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আফজাল হোসেন প্রমুখ। এ সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Post Under