এমদাদুল হক সোহাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। প্রিয় বাবার কবরের দক্ষিণ পাশে দাফন করা হয় তাকে।
শনিবার (১৬ মার্চ) বেলা ৩টায় নগরীর পুলিশ লাইন এলাকায় কুমিল্লা সরকারি কলেজ মাঠে জানাজা শেষে শহরতলীর শাসনগাছা এলাকার মহাজন বাড়ি সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থান ও মসজিদের সামনে দ্বিতীয় জানাযা শেষে দাফন করা হয়। প্রথম জানাযায়, পরিবারের পক্ষে অবন্তিকার ছোট ভাই অপূর্ব বক্তব্য রাখেন। তিনি তাঁর বোন হত্যার বিচার চান। কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুর রহমানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেফতাহুল হাসান, আমি একজন ভাগ্য বিহ্বলিত শিক্ষক। গতবছর ঢাকায় অবন্তিকার বাবার জানাযায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। তিনি বলেন অবন্তিকা অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি তাকে কোনদিন ক্লাসে বা ক্যাম্পাসে অসংলগ্ন আচরণ করতে দেখেনি। তাঁর মৃত্যুর পেছনে যারাই জড়িত তাদের খোঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবন্তিকার পরিবারকে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে ইতিমধ্যে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এসময় কুমিল্লা সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মোঃ আনোয়ারুল হক বক্তব্য রাখেন। জানাযায় কুমিল্লা বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
এ দিকে এ ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে কুমিল্লা নগরীর পূবালী চত্বরে সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জোটের আয়োজনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
শনিবার দুপুরে অবন্তিকার মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বেলা ১টার দিকে বাগিচাগাঁও ফায়ার সার্ভিস পুকুর পাড় সংলগ্ন অবন্তিকার ভাড়া বাসা অরণি বভনের সামনে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি আসলে পরিবার পরিজন ও সহপাঠীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। অবন্তিকার মা সড়কের উপর অচেতন হয়ে পড়ে যান।
দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেক শিক্ষার্থী ও ৩ জন শিক্ষকের সমন্বয়ে সহপাঠীরা অবন্তিকার বাড়িতে মরদেহ দেখতে কুমিল্লা আসেন। এ সময় তারা দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি করেন।
এ দিকে বেলা ৩টায় কুমিল্লা সরকারি কলেজ মাঠে প্রথম জানাজা ও বিকেল ৪টায় শাসনগাছা এলাকায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয় অবন্তিকাকে।
উল্লেখ্য, শিক্ষক-সহপাঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা আত্মহত্যা করেন। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা সদরের বাগিচাগাও এলাকায় নিজ বাসায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ফাইরুজ অবন্তিকা। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।