এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জালিয়াতির মাধ্যমে জমির জাল দলিল সৃজন করার তিন হোতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ভুয়া দলিল দাতা সাধন সরকার, সনাক্তকারী মো. রুস্তম আলী এবং দলিল লেখক সদর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাহারুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে ভুয়া দাতা সেজে জায়গা দলিল করে নেয়ার ঘটনা ধরা পরার পর রাতে জমির ভুয়া বিক্রেতা, দলিল লেখক ও দলিল সনাক্তকারীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের মোহরার জয়ন্তী রানী চক্রবর্তী মামলা করেন। মামলায় ভুয়া দলিল দাতা বিজয়নগর উপজেলার দক্ষিণ রাজাবাড়ি গ্রামের সাধন সরকার, সনাক্তকারী জেলা শহরের কান্দিপাড়া মহল্লার মো. রুস্তম আলী এবং দলিল লেখক সদর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাহারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে সদর মডেল থানা পুলিশ। দলিল লেখক কাজী সাহারুল সদর উপজেলার সুুহিলপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগেরও সাধারণ সম্পাদক।
আরো পড়ুনঃ
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর সাব রেজিষ্টারের এজলাসে বিজয়নগর উপজেলার চর-পাঁচগাও মৌজার বিএস চূড়ান্ত ৭২৭ খতিয়ানভূক্ত বিএস ৪৪৫৭ দাগের ৩৫ শতক জমি নিবন্ধনের জন্য দাখিল করা হয়।খতিয়ানে জমির মূল মালিক হিসেবে মৃত চন্দ্র কিশোর শর্মার পুত্র হরেন্দ্র কান্ত শর্মার নামোল্লেখ থাকলেও নিবন্ধনের জন্যে দলিল দাখিল করেন সাধন শর্মা। সে তার জাতীয় পরিচয়পত্রে পিতা অবচরণ সরকারের পরিবর্তে হরেন্দ্র কান্ত শর্মা লিপিবদ্ধ করেন। সাব রেজিষ্টার মো. ইয়াছিন আরাফাতের নিকট বিষয়টি সন্দেহ হলে তিনি এ্যাপসের সাহায্যে জাতীয় পরিচয়পত্র পরীক্ষা করে ভুয়া বলে নিশ্চিত হন। এরপরই সাধন সরকার এবং মো. রুস্তম আলীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। রাতে মামলা হবার পর পুলিশ ওই দলিলটির লেখক কাজী সাহারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।সৃজনকৃত জাল দলিলে জমির মূল্য দেখানো হয় এক লাখ আট হাজার টাকা। দলিল গ্রহিতা হিসেবে নাম রয়েছে বিজয়নগর উপজেলার চর ইসলামপুর গ্রামের মৃত মন্ডল হোসেনের পুত্র মো. ইয়াছিন মিয়ার। তাকে ছাড়াও শহরের মেড্ডার নয়ন রিষি এবং বিজয়নগর উপজেলার ইসলামপুরের মো. নূরুল ইসলামকে মামলায় আসামী করা হয়েছে।
সদর সাব রেজিষ্টার হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকারী আখাউড়ার সাব রেজিষ্টার মো: ইয়াছিন আরাফাত জানান, ‘নিবন্ধন মহা পরিদর্শকের সাথে কথা বলে মুল দলিলটি জব্দ করা হয়েছে। সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে আটকের পর দলিল দাতা সাধন জানায়, সে দুই হাজার টাকার বিনিময়ে জমির দাতা হয়েছে। জমির মালিক সে নিজে,তাকে এমনটি বলার জন্যে শিখিয়ে দেয়া হয়।’