প্রায় ৪৬০ কোটি বছর আগে একটি দৈত্যাকার আন্তঃনাক্ষত্রিক আণবিক মেঘের মহাকর্ষীয় পতনের ফলে সৌরজগতের উদ্ভব ঘটেছিল। সমগ্র সৌরজগতের ভরের অধিকাংশ অংশই রয়েছে সূর্যে। এ নক্ষত্র থেকেই জন্ম পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহ-উপগ্রহের। এ কারণে প্রাচীনকাল থেকে নক্ষত্রটি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মুগ্ধ করে আসছে। তবে এবার সেই প্রাচীন সূর্য দেখে বিস্মিত বিজ্ঞানীরা, খানিকটা ভীতও বলা যায়।
সম্প্রতি নাসা জানিয়েছে, সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে একটি বিশাল অংশ ভেঙে পড়ে নক্ষত্রটির উত্তর মেরুতে সরে এসে বিশাল এক ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি করেছে। এর ফলাফল কি হতে পারে তা নিয়ে নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা।
সংস্থাটি বলছে, মহাকাশে ভ্রমণরত সর্বাধুনিক জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ গত সপ্তাহে সূর্যের যে ছবি পাঠিয়েছে, সেখানেই ধরা পড়েছে এ চিত্র।
নাসা কর্মকর্তা ও স্পেস ওয়েদার ফোরকাস্টার ড. তামিথা সকোভ নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে সূর্যের একটি ছবি শেয়ার করে জানিয়েছেন, ‘সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে সরে যাওয়া অংশটি নক্ষত্রের উত্তর মেরুতে বিশাল এক ঝড়ের সৃষ্টি করেছে।’
নাসার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সূর্যের পৃষ্ঠে এ ধরণের ভাঙন নতুন কিছু নয়। গেলো ৬-৭ দশকে কয়েকবার এমন ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে নাসা। তবে সূর্যের কোনো অংশ ভেঙে পড়া এবং এমন ঝড় সৃষ্টির ঘটনা নাসার ইতিহাসে এই প্রথম। এ কারণেই হতবাক মার্কিন মহাকাশবিজ্ঞানীরা।
ইউএস ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাটমোস্ফিয়ারিক রিসার্চের সৌর পদার্থবিদ স্কট ম্যাকিনটোশ, যিনি কয়েক দশক ধরে সূর্য পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি স্পেস ডটকমকে জানান, সূর্যের একটি টুকরো ভেঙে যাওয়ার ফলে এমন “ঘূর্ণি” তৈরি হয়েছে, যা তিনি আগে কখনও দেখেননি।
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা এখন এ অদ্ভুত ঘটনাটি বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করছেন এবং এ সম্পর্কে আরও বিশদে তথ্য সংগ্রহ করছেন।
ভবিষ্যতে কি হতে পারে তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন তারা।
সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব আনুমানিক ১৪ কোটি ৯৬ লাখ কিলোমিটার । অনেক দূরে থাকলেও সূর্যের পৃষ্ঠে ঘটা যেকোনো ঘটনা পৃথিবীসহ সৌর জগতের অন্যান্য গ্রহ-উপগ্রহকে প্রাভাবিত করতে পারে। ফলে বিষয়টি হালকাভাবে নিচ্ছেন না নাসা বিজ্ঞানীরা।