কুমিল্লা জেলার মুরাদনগ উপজেলায় সন্দেহভাজন চোর ধরাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে রাতভর দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার রাত সাড়ে ৯টার পর উপজেলার সদর ইউনিয়নের আলীরচর ও সোনাপুরগ্রামের মধ্যে গোমতী বেরিবাঁধে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে কয়েকবার পুলিশ কে জানানোর পরও ঘটনাস্থলে কেউ না যাওয়ার অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। সংঘর্ষে গুরুতর আহত বাবুল মিয়া(৪০)কে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল(কুমেক) ও সাদ্দাম হোসেন(১৮)কে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখনো দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় ইলেকট্রিক কাজ শেষে আলীরচর গ্রামের কয়েকজন ছেলে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে সোনাপুর গ্রামের কিছু লোক তাদের চিনতে না পেরে চোর চোর বলে ধাওয়া করতে থাকে। অবস্থা বেগতিগ দেখে ছেলেরা প্রানের ভয়ে ঘটনাস্থলে থাকা মহিউদ্দিনের দোকানে আশ্রয় নেয়। দোকানদার মহিউদ্দিনও তাদেরকে বাচানোর জন্য দোকানের শাটার ও দরজা বন্ধ করে দেয়। একপর্যায় সোনাপুরের লোকজনকে দোকানের সামনে থেকে চলে যেতে বাধ্য করে। সেই ক্ষোভ থেকে সোনাপুর গ্রামের মানুষ মাইকিং করে লোক জড়ো করে। একপর্যায় ঐ এলাকার লোকজন রামদা, হকিষ্টিক, দা, মাছ ধরার চলসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহিউদ্দিনের দোকানে হামলা চালিয়ে দোকানের জিনিসপত্র ও দুপুরে কিস্তি থেকে তোলা নগদ ১লক্ষ ৯০হাজার টাকা লুটপাট করে। একপর্যায় পাশে থাকা তার বাড়িতে হামলা করে তার মা ও তার বোনের উপর হামলা করার চেষ্টা করে লুটপাট চালায়। এ খবর শুনে আলীরচর গ্রামের লোকজন রাত ১২টার দিকে সোনাপুর গ্রামে লাটিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাল্টা হামলা চালিয়ে একটি বাড়ি ভাংচুর করে। আলীরচর গ্রামবাসী হামলা করে চলে আসার পর সোনাপুরের লোকজন আবারও আলীরচর(কান্দা) উপর হামলা চালিয়ে মহিউদ্দিনের মামার বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে ভাংচুর করে লুটপাট চালায়। রাত ১টার দিকে আলীরচরের লোকজন হামলার খবর শুনে আবারও এগিয়ে গেলে দুপক্ষের মধ্যে কয়েকদফায় তুমুল সংঘর্ষ হয়। এতে সোনাপুর গ্রামের একজন গুরুতরসহ ৬ জন এবং আলীরচর গ্রামের একজন গুরুতরসহ ৫ জন আহত হয়।
এ ব্যাপারে মহিউদ্দিনের মা দিলু বেগম বলেন, “একটি নিরিহ ছেলেকে বাচানোর জন্য সোনাপুরের লোকজন আমার ছেলের দোকান, আমার বাড়িসহ আরো দুইটি বাড়ি ভাংচুর করে নগদ টাকাসহ ঘরের মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। বাড়িতে আসলে তারা আমাদের জানে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। তাই আমি এবং আমার পরিবার এখন অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি। আমি এর সঠিক বিচার চাই। “অন্যদিকে বাবুলের ভাই আবুল হোসেন বলেন, “আমাদের গ্রামের মানুষদের উপর অন্যায়ভাবে হামলা করে আমার ভাইকে আহত করে। আমি এই হামলাকারীদের সঠিক বিচার চাই।
এ ব্যাপারে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর মুঠোফোনে বলেন, ঘটনায় সময় আমাকে ফোনে জানিয়েছিলেন এলাকার লোকজন। কিন্তু আমাদের টহল টিম অন্য দিকে থাকায় সেখানে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।