স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িত, অভিমানে যুবলীগ নেতার আত্মহত্যা

কুমিল্লা মহানগরীর এক যুবলীগ নেতা মেসেঞ্জারে স্ত্রীকে আত্মহত্যার কথা জানিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এমরান হোসেন মুন্না নামে এই যুবলীগ নেতা বুধবার শহরতলীর বারপাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেন।

আত্মহত্যার দুদিন পর শুক্রবার মুন্নার স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িত এ কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। এ ঘটনা নিয়ে নগর জুড়ে তোলপাড় চলছে।

সূত্র জানায়, পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রেমের সম্পর্ক করে বিয়ে করেন এমরান হোসেন মুন্না ও সৈয়দা সাজিয়া শারমিন ঊষা। এক বছর না যেতেই তাদের দাম্পত্য জীবনে অশান্তি শুরু হয়।

স্ত্রী ঊষার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঢাকায় পড়াশুনার সুবাদে তিনি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। নানাভাবে চেষ্টা করেও তাকে পরকীয়া থেকে ফেরাতে না পেরে ক্ষোভে, অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন এমরান হোসেন মুন্না।

বৃহস্পতিবার এমরানের স্ত্রীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন মুন্নার বাবা মো. মতিউর রহমান।

মামলা সূত্রে জানা যায়, শহরতলীর বারপাড়া এলাকার মো. মতিউর রহমানের পুত্র এমরান হোসেন মুন্না ও লাকসামের খিলা বাজার গ্রামের সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের কন্যা সৈয়দা সাজিয়া শারমিন ঊষা কুমিল্লা সরকারি সিটি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। দুজন এক বছরের সিনিয়র-জুনিয়র ছিলেন। কলেজ জীবনে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন দুইজন। দীর্ঘ দিন প্রেমের পর ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি তারা বিয়ে করেন।

বিয়ের বছর না যেতেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। ঊষা রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার সুবাদে বেশিরভাগ সময় ঢাকায় থাকতেন। মুন্না প্রথমে কুমিল্লায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন। পরবর্তীতে চাকরি ছেড়ে তিনি কুমিল্লাতে ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করেন।

মুন্নার পরিবারের অভিযোগ, ঊষা ঢাকায় সোহেল নামের এক ছেলের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে মুন্নাকে বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করতেন। চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারায় সোহেলকে কটাক্ষ করে মরে যেতে বলতেন। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন মুন্না।

গত বুধবার মুন্না আত্মহত্যার প্রস্তুতি নিয়ে স্ত্রী ঊষাকে মেসেঞ্জারে ছবি পাঠান এবং ম্যাসেজ করেন। কিন্তু ঊষা এতে পাত্তা দেননি, কাউকে জানাননি; বরং উল্টো তিনি উসকানিমূলক কথাবার্তা বলেন। পরে মুন্না ক্ষোভে শোবার ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে উড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরিবারের লোকজন আওয়াজ পেয়ে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এদিকে যুবলীগ নেতা মুন্নার মৃত্যুতে রাজনৈতিক সহকর্মী ও সহপাঠীরা তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছেন। তারা স্ত্রী ঊষার বিচার দাবি করছেন।

মুন্না ও ঊষার মেসেঞ্জার কথোপকথন ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায় মুন্না লিখেছেন, আর পাঁচটা মানুষের মতো আমার জীবন না। মনে রাখিস, তোর বেঈমানি ও পরকীয়ার জন্য আত্মহত্যা করলাম আমি…।

ঘটনার বিষয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল আজিম বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত করা হয়েছে। পরিবার আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।

Post Under