এইচ.এম. সিরাজজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
দুই সন্তানের জননী সাথী আক্তার। স্বামী মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী হলেও সইতে হতো নির্যাতন। শেষতক মরদেহ হাসপাতালে ফেলেই সটকে পড়েছেন স্বামীগৃহের লোকজন। ওই গৃহবধূর সন্তানরাও জানেনা কোথায় তাদের মা! ‘সাথী স্ট্রোক করেছে’ এই খবরে পিত্রালয়ের লোকজন শ্বশুরালয়ে এসেও তাকে পায়নি। গ্রামবাসীর কাছ থেকে জানেন, ‘শুনেছি শাহীনের বউ গলায় ফাঁস দিয়েছে’! খুঁজতে খুঁজতে অবশেষে সাথীর লাশ মিলে।পরিবারের অভিযোগ, সাথী পরিকল্পিত হত্যার শিকার।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে নিহতের বাবার বাড়ির লোকজন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে এসে সাথীর মরেদহ শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে পাঠায় মর্গে। নিহত গৃহবধূ সাথী আক্তার (২৮) সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চিনাইর খেওয়াই গ্রামের প্রবাসী শাহীন মিয়ার স্ত্রী এবং জেলার কসবা উপজেলা সদরের আড়াইবাড়ি গ্রামের আবদুস সাত্তারের মেয়ে।
নিহতের পরিবার, এলাকাবাসী এবং পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিগত ১০ বছর আগে খেওয়াই গ্রামের শাহীন মিয়ার সাথে বিয়ে হয় কসবা পৌর এলাকার আড়াইবাড়ি গ্রামের আবদুস সাত্তারের মেয়ে সাথী আক্তারের। এক ছেলে এক মেয়ের মা হলেও প্রবাসীর স্ত্রী সাথী আক্তারকে সইতে হতে শ্বশুরালয়ের লোকদের গঞ্জনা-লাঞ্ছনা। গত বুধবার রাতে স্বামীর বাড়ির লোকজন জানায় গৃহবধূ সাথী স্ট্রোক করেছে। পরবর্তীতে স্বামীর বাড়ির লোকজনরে সাথে যোগযোগ করতে চাইলে তারা নানা তালবাহানা শুরু করেন। পরে বৃহস্পতিবার সাথীর বাবার বাড়ির লোকজন খেওয়াই গ্রামের স্বামীগৃহে এসে সাথীকে পায়নি। এমনকি পায়নি সাথীর দুই শিশু সন্তানকেও। গ্রামের লোকজন জানায়, ‘আমরা শুনেছি শাহীনের বউ গলায় ফাঁস দিয়েছে, হাসপাতালে নিয়ে গেছে। দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের গিয়ে সাথীর মরেদহ পরে থাকতে দেখেন। ওই সময় শ্বশুর বাড়ির কাউকে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে লাশ ফেলে রেখে তারা বেপাত্তা হয়েছেন। এদিকে হাসপাতাল সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) আবদুর রহিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,’খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।