মারা গেলেন গুলিবিদ্ধ সেই আইনজীবী আবুল কালাম
এমদাদুল হক সোহাগ
মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত মারা গেলেন কুমিল্লার জনপ্রিয় আইনজীবী আবুল কালাম। রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডিস্থ পপুলার হসপিটালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় দুপুর দুটায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। রাজনৈতিক জীবনে তিনি বিএনপি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সদস্য ও বিভিন্ন মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। মরহুম আবুল কালামের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায়।তিনি পরিবার নিয়ে কুমিল্লা নগরীর রানীর দিঘীর পাড় মহিলা কলেজ রোডে বসবাস করছেন। কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সিমিতির সাবেক কার্যকরী পরিষদের নেতা এবং আইন পেশায় ২৫ বছর ধরে নিয়োজিত ছিলেন। সংসার জীবনে দুই মেয়ে, স্ত্রী ও আত্মীয় স্বজন, বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
জানা যায়, গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের খবরে অন্যান্য আইনজীবীদের সাথে পদযাত্রা ও বিজয় উল্লাসে কান্দিরপাড় এলাকায় যান তিনি। পরবর্তীতে জজ কোর্ট, ফৌজদারি মোড়, ডিসি অফিস, পুলিশ লাইন, সার্কিট হাউজ মোড় হয়ে মোগলটুলী এলাকায় গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের উপর অতর্কিত গুলি ও হামলা চালায়। হামলায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের রুলস এন্ড পাবলিকেশন কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান এডভোকেট কাইমুল হক রিংকুসহ আইনজীবী ফোরামের নেতা আবুল কালাম ও মাহবুব খন্দকার, মুমিনুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরতর আহত হন। তাছাড়া কাইমুল হক রিংকুর দুই ছেলেও গুরতর আহত হন।
আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মোঃ শরীফুল ইসলাম জানান, সেদিন (৫ আগস্ট) কাইমুল হক রিংকু সাহেবের নেতৃত্বে বিজয় উল্লাস দেখতে আমরা ১০/১৫জন কান্দিরপাড় এলাকায় আসি। ওই সময় জেলা ও দায়রা জজের ফোন আসে রিংকু ভাইয়ের নাম্বারে। আন্দোলনকারীরা জজকোর্টে হামলা চালাতে একত্রিত হচ্ছে ও স্লোগান দিচ্ছে জানিয়ে সহায়তা চান তিনি। পরে আমরা আবার রিংকু ভাইয়ের সাথে জজকোর্টে গিয়ে আন্দোলনকারীদের নিবারন করে পুলিশ লাইন, ডিসি অফিস হয়ে সার্কিট হাউজ মোড়ে আসি। নগরীর পাঁচ নং ওয়ার্ডের মোগলটুলী হাইস্কুলের কাছে যেতেই সন্তাসীরা গলির ভেতর থেকে দৌড়ে এসে আমাদের লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা ও গুলি চালায়।
আইনজীবী নেতা কাইমুল হক রিংকু জানান, কোন কিছু বুঝার আগেই কিছু লোক দৌড়ে এসে গুলি চালায়। আবুল কালাম ভাইকে পিটিয়ে বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে তারা। তিনি বলেন, কাউন্সিলর রায়হানের লোকজন ওই হামলা চালিয়েছে।
আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট তারেক আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা কল্পনাও করতে পারিনি এমন জঘন্য হামলা হবে। সেদিন আমাদের প্রিয় নেতা কাইমুল হক রিংকুকে পিটিয়ে গুরতর আহত করে, তাঁর দুই ছেলের একজনের মাথায় সাতটি সেলাই দিতে হয়েছে। তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।