কসবায় কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি

কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো উপজেলার ৪০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। শনিবার (২৪ আগস্ট) ভোর থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় উপজেলার ডুবে যাওয়া নিম্নাঞ্চল থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। উপজেলার বিজনা, সালদা, সিনাই, বুড়ি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আজ ভোর থেকে প্রায় ১০ সেন্টিমিটার পানি কমতে দেখা গেছে। ভারী বর্ষণ না হলে খুব দ্রুত পানি নেমে আসবে বলে জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুর রহমান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বায়েক, কায়েমপুর ও গোপিনাথপুর ইউনিয়নে ভারী বর্ষণ ও ত্রিপুড়া থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়েন ৪০টি গ্রামের মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন অনেক পরিবার। ইতোমধ্যে বন্যাদুর্গতদের সহায়তায় উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সেচ্ছাসেবী সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো কাজ করছে। এদের পক্ষ থেকে পানিবন্দি মানুষদের মাঝে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, মোমবাতিসহ বিভিন্ন সহায়তা দেয়া হচ্ছে কিন্তু এই সহায়তা বন্যার্তদের জন্য অপ্রতুল। অধিক পরিমানে সাহায্য ও সহযোগিতা প্রয়োজন। বন্যার পানিতে ঘরে থাকা ধান-চাল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় খাদ্য সংকটে ভূগছে অনেক পরিবার। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রানের ব্যবস্থা করতে সরকার এবং সেনাবাহিনীর সহায়তা প্রয়োজন বলে জানান স্বেচ্ছসেবী সংগঠনের লোকজন।
বন্যার কারনে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে কসবা-কুমিল্লা সড়ক যোগাযোগ বাধাগ্রস্থ হয়েছে। উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অফিসের তথ্যমতে তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৬০ কিলোমিটার রাস্তা ভেংগে ও খানাখন্দে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কৃষি অফিসের তথ্যমতে বন্যায় তলিয়ে গেছে ৪ হাজার ৫শ ৮৩ হেক্টর আমন চাষকৃত জমি। সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে ১ শ ৭৫ হেক্টর ও আমনের বীজতলা ১০ হেক্টর। এছাড়া স্থানীয়দের তথ্যমতে শত শত পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় বেরিয়ে গেছে সকল পুকুরের মাছ। এতে কোটি কোটি টাকার লোকসানে পড়েছেন ওই এলাকার মৎস্য চাষিরা। উল্লেখ্য, উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্থ ইউনিয়নগুলোতে মাছ চাষের উপযোগী হওয়ায় এখানকার অধিকাংশ মানুষই মাছ চাষে সম্পৃক্ত।
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় সালদা, সিনাই, বিজনা, বুড়ি নদীর পানি কমতে শুরু করেছে ৷ সর্বশেষ তথ্য মতে প্রায় ৪০ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। তিনটি ইউনিয়নের বন্যা কবলিতদের জন্য ১০ মেট্রিক টন চাল ও ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবারের ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বন্যাপীড়িতদের জন্য ৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

Post Under