কসবায় বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

দাবী না মানলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুশিয়ারি

কসবা (ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা ও পৌরসভা জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নতুন আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে সদ্য বিলুপ্ত হওয়া উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির কমিটির নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) বেলা ১১টায় কসবা প্রেসক্লাবে জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবী জানিয়েছেন তারা। বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলছেন, অর্থের বিনিময়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক জিল্লুর রহমান ও কবির হোসেনের যোগসাজশে কসবা উপজেলা ও পৌর বিএনপির যোগ্য, সক্রিয় ও ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে অস্তিত্বহীন ব্যক্তিদের দিয়ে আহবায়ক কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটি আগামী ৮ মার্চের মধ্যে বাতিল করে নতুন আহবায়ক কমিটি ঘোষণা না দিলে বৃহত্তর কর্মসূচী ঘোষণা দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদ্য বিলুপ্ত হওয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইকলিল আজম। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, কবির হোসেন বিএনপির কেউ নন। তার ছোট ভাই আরাফাত সানি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারেক জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী। ছোট ভাইয়ের প্রভাব দেখিয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক জিল্লুর রহমানের মাধ্যমে অনৈতিকভাবে অর্থের বিনিময়ে উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারী ও জনবিচ্ছিন্ন লোক দিয়ে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি বাতিল করে আগামী ৮ মার্চের মধ্যে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করতে হবে। নতুবা বৃহত্তর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।
সদ্য বিলুপ্ত হওয়া উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সদ্য বিলুপ্ত হওয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ ইলিয়াছ, সাধারণ সম্পাদক মো. ইকলিল আজম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল ইসলাম ভুইয়া, সহ-সভাপতি মো. বেনজির আহাম্মদ রাসু, মো. হেলাল উদ্দিন, মো. আনোয়ার হোসেন ভূইয়া, মো. মোস্তফা কামাল, কসবা পৌর বিএনপির সভাপতি মো. আশরাফ, সাধাারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন প্রমুখ। এ সময় উপজেলা, পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্তরের দেড়শতাধিক নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, গত বছরের ৩ নভেম্বর জিল্লুর রহমানকে জেলা বিএনপির আহবায়ক করা হয়। জিল্লুর রহমান আহŸায়ক কমিটির অন্য সদস্যদের সাথে কোন পরামর্শ না করেই রাতের অন্ধকারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের মাধ্যমে ৮ নভেম্বর কসবা উপজেলা ও কসবা পৌর বিএনপির কমিটি ভেঙে দেন। পরদিন কসবা উপজেলা ও পৌর বিএনপির সিনিয়র ৪০ জন নেতা জেলা আহŸায়কের সাথে দেখা করার পর দীর্ঘ আলোচনার পর তিনি আমাদেরকে উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি জমা দিতে বলেন।
এর পরদিন কমিটিতে ত্যাগী, সক্রিয় ও যোগ্য নেতাদের নিয়ে দুইটি পৃথক কমিটি জমা দেই। অর্থের বিনিময়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক জিল্লুর রহমান ও কবির হোসেনের যোগসাজশে তাদের সুপারিশকৃত উপজেলা ও পৌর বিএনপির যোগ্য, সক্রিয় ও ত্যাগী দলের জৈষ্ঠ নেতাদের বাদ দিয়ে আইনজীবি ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. ফখর উদ্দিন আহাম্মদকে আহবায়ক এবং উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মো. শরীফুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করেন।
ওই কমিটিকে উপজেলা ও পৌর বিএনপি ও ১০টি ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ১৩ নভেম্বর ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করে রেজ্যুলেশন করে জেলা নেতৃবৃন্দকে জানানো হয়। ওই কমিটি আগামী ৮ মার্চের মধ্যে বাতিল করে নতুন প্রস্তাবিত কমিটি ঘোষণা না দিলে বৃহত্তর কর্মসূচী দেওয়া হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের তারা জানান।
কসবা উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটির আহবায়ক মো. ফখর উদ্দিন আহাম্মদ খান বলেন, বিএনপি একটি বড় দল। এতে প্রতিদ্বন্ধিতা থাকবে। কাউকে বাদ দিয়ে দল পরিচালনা করা হবে না। গঠনতন্ত্র মোতাবেক সবাইকে নিয়েই দল পরিচালনা করা হবে। তিনি বলেন, সীমিত সময়ের জন্য আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হবে।

Post Under