এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে যৌতুকের জন্য গৃহবধূ জোনাকি আক্তারকে(২০) শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে তার স্বামী ইসমাইল মিয়ার বিরুদ্ধে। ঘটনার পর বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে নিহতের শ্বশুরালয়ের লোকজন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।
শুক্রবার(২ এপ্রিল) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে মর্গে নিহতের ময়না তদন্ত সম্পন্নের পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে জেলার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের বড়াইল গ্রামের শ্বশুরালয় থেকে উদ্ধার হয় তার মরদেহ। নিহত জোনাকি আক্তার ওই গ্রামের আবু তালেহের পুত্র ইসমাইল মিয়ার স্ত্রী এবং পার্শ্ববর্তী ঘাগড়াজুর গ্রামের মিনার বাড়ির আব্দুল জাহের মিয়ার মেয়ে।
আরো পড়ুনঃ
নিহতের পরিবার, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত এক বছর আগে আবু তালেহের ছেলে ইসমাইল মিয়া জোনাকি আক্তারকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন।এর আগে জোনাকির বড়বোন হাফেজা আক্তারকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেছিলো ইসমাইল। তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই সন্তান জন্মের পরও বনিবনা না হওয়ায় গ্রাম্য সালিশে হাফেজা ও ইসমাইলের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এ ঘটনার পর জোনাকিকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করে ইসমাইল। তবে যৌতুকের জন্য প্রায়শই জোনাকিকে মারধর করা হতো৷ কিন্তু পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করায় পিত্রালয়ের সাথে কোন যোগাযোগ ছিলো না। ফলে স্বামীর মার খেয়েও জোনাকি পিত্রালয়ের কাইকে কিছু বলতেন না, নিরবেই সইতেন। এরই এক পর্যায়ে মারধর করাসহ শ্বাসরোধে গৃহবধূ জোনাকিকে হত্যার পর শ্বশুরালয়ের লোকেরা বাড়ি ছেড়ে পালায়।
নিহতের ভাই আতাউল্লাহ জানান, বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় লোকদের মাধ্যমে জানতে পারি আমার বোন জোনাকিকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে ইসমাইল। তারপর বাড়িতে গিয়ে দেখি শোয়ার ঘরে জোনাকির লাশ পড়ে আছে। জোনাকির স্বামী ইসমাইল মিয়াসহ তার বাবা-মা কাউকেই বাড়িতে পাইনি। পরে পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতে করতে পাষণ্ড ইসমাইল আমার বোনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে, আমি তার ফাঁসি চাই।
সরাইল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে গৃহবধূ জোনাকির লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় জোনাকির শ্বশুরালয়ের কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। ময়না তদন্তের পর লাশ গৃহবধূর ভাইয়ের কাছ হস্তান্তর করা হয়েছে। এব্যাপারে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।’