নববধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ : শ্বশুরালয়ের লোকজন বেপাত্তা

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
মাত্র ছ’মাস আগেই বিয়ে হয় সীমার। এখনও হাতের মেহেদির রঙই শুকায়নি। এর আগেই তাকে হতে হতে হলো যৌতুকের কড়াল গ্রাসের শিকার। স্বামীগৃহ থেকে উদ্ধার হলো তার ঝুলন্ত মরদেহ। যৌতুকের জন্য সীমাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারে। এদিকে ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা সীমার স্বামী ইকবাল হোসেনসহ শ্বশুরালয়ের লোকজন।
বুধবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশ জেলা শহরের উত্তর পৈরতলার হিরণ মিয়ার বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। নিহত মাহমুদা আক্তার সীমা (২০) ওই গ্রামের মৃত হিরণ মিয়ার পুত্র ইকবাল হোসেনের স্ত্রী এবং জেলার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর দক্ষিন কলেজপাড়ার রুহুল আমিনের মেয়ে।
নিহতের পরিবার, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত মাত্র ছ’মাস আগে জেলা শহরের উত্তর পৈরতলা এলাকার মৃত হিরণ মিয়ার ছেলে ইকবাল হোসেনের সাথে কসবার গোপীনাথপুর গ্রামের রুহুল আমিনের মেয়ে মাহমুদা আক্তার সীমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেি সীমাকে তার স্বামী-শ্বাশড়ি যৌতুকের  টাকার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলো। কয়েকমাস আগে এক লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করেন ইকবাল। মেয়ের সুখের জন্য ইকবালকে ১০হাজার টাকা দিয়েছিলেন সীমার পিতা রুহুল আমিন। এতেও তাদের সংসারের শান্তি হয়নি। মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় লোকদের মাধ্যমে রুহুল আমিন জানতে পারেন তার মেয়ে সীমাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে ইকবাল হোসেন। তারপর বাড়িতে গিয়ে দেখেন সীমার লাশ শোবার ঘরে পড়ে আছে। সীমার স্বামী ইকবালসহ তার বাবা-মা কাউকেই বাড়িতে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানায় মৃত্যুর পর ইকবালসহ সবাই পালিয়েছে। পরে পুলিশকে জানানোর পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সীমার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের
জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহতের পিতা রুহুল আমিন বলেন, ‘আমার মেয়েকে যৌতুকের টাকার জন্য ইকবাল প্রায়ই মারধর করতো৷ মান সম্মানের কথা ভেবে সীমা এসব সহ্য করতো, স্বামীর অত্যাচারের কথা আমাদের বলতো না। গতকাল সীমাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর ইকবাল ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে রাখে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. আবদুর রহিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধারকালে শ্বশুরালয়ের কাউকেই বাড়িতে পাওয়া যায়নি। ময়না তদন্তের পর গৃহবধূর লাশ পরিবারের কাছ হস্তান্তর করা হয়েছে। এব্যাপারে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।’
Post Under