কসবায় জুয়া খেলায় বাঁধা দেওয়ায় এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন, থানায় মামলা

কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রা‏‏হ্মণবাড়িয়ার কসবা কুটি চৌমুহনী এলাকায় জুয়া খেলায় বাঁধা দেওয়ায় ফারুক মিয়া (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে কসবা থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। নিহতের লাশ গত শনিবার রাতে ব্রা‏‏হ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। রোববার সকালে নিহতের লাশ দাফন করেছে স্বজনরা।
নিহত ফারুক মিয়া কসবা পৌর শহরের মৃত আবু তাহেরের ছেলে। তিনি তিন কন্যা সন্তানের জনক। পেশায় ব্যাটারী চালিত অটোবাইক চালক।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ফারুক মিয়া গত শুক্রবার তাঁর বাড়িতে ছিলেন। ওই দিন বিকাল বেলায় কুটিচৌমুহনী এলাকার লিটন মিয়া মুঠোফোনে তাকে ডেকে নেয় কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কুটিচৌমুহনী এলাকায় পেট্রোল পাম্পের কাছে। ওই এলাকায় শাহপুর গ্রামের দেলোয়ার মিয়া ও কামাল মিয়াসহ কয়েকজন জুয়ার আসর বসায়। জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে দেলোয়ার ও কামালসহ কয়েকজন ঝগড়া করে। এ সময় ফারুক তাদেরকে বাঁধা দেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে দেলোয়ার ও কামালসহ কয়েকজন তাকে বেদম পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ফেলে রাখেন। এ সময় লিটন মিয়া স্থানীয় কয়েকজনের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ওই মেডিক্যাল কলেজে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি দেখা দিয়ে চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপালের প্রেরণ করেন। শনিবার সন্ধায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
রাতেই লাশটি নিয়ে আসা হয় ফারুকের বাড়িতে। খবর পেয়ে কসবা থানার পুলিশ নিহতের লাশ থানায় নিয়ে আসে। এ সময় এলাকার শতশত মানুষ থানায় এসে জড়ো হয়। দেলোয়ার ও কামালের বিরুদ্ধে ¯েøাগান দিতে থাকে দিতে থাকে। তারা খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন। রাতেই পুলিশ নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নিলুফা আক্তার বাদী হয়ে গত শনিবার রাতে কসবা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় দেলোয়ার ও কামাল মিয়াসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামী করা হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী নিলুফা আক্তার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, লিটন আমার স্বামীকে ডেকে নিয়েছিল। সেখানে কামাল ও দেলোয়ারসহ কয়েকজন জুয়া খেলছিল। তারা জুয়া খেলা নিয়ে ঝাগড়া করছিল। আমার স্বামী তাদেরকে বলছিল তরা ঝগড়া করছ্ কিরে, তোরাতো একসাথে থাকছ্ আবার জুয়া খেলছ্। এ কথা বলায় দেলোয়ার ও কামালসহ আরো ৩/৪ জন মিলে তাকে পিটিয়ে খুন করেছে। তিনি বলেন, আমার তিনটি মেয়ে আছে। একজনকে বিয়ে দিলেও দুইজন বিয়ের বাকী রয়েছে। আমার স্বামী সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। আমাদের এখন না খেয়ে মরতে হবে।
নিহতের ৯ বছরের শিশু কন্যা রিয়া মনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলে, আমার বাবা আমাকে আর আদর কববে না। ওরা আমার বাবাকে মেরে ফেলেছে। আমি বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাই।
কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলমগীর ভূইয়া জানান, জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ফারুককে মারধোর করায় তিনি মারা গেছেন। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ব্রা‏‏হ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নিলুফা আক্তার বাদী হয়ে দেলোয়ার ও কামালসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আসামীরা পালিয়ে গেছে, তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

 

 

Post Under