মোহাম্মদ শাখাওয়াৎ হোসাইন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় এক ডেলিভারীম্যানকে অপহরণের পর শ্বাসরোধ ও মাথায় আঘাত করে হত্যার পর টাকা লুট করা হয়েছে। আজ সকালে উপজেলার কসবা-নয়নপুর সড়কের পশ্চিম পাশে আকছিনা গ্রামের ইটখোলার একটি নির্মাণাধীন ভবনের পাশে নিহত আসাদ মিয়ার (২৭) লাশ পাওয়া যায়। নিহত আসাদ মিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলার কাজলা গ্রামের মৃত জিল্লুর রহমানের পুত্র। আসাদ মিয়া কসবা উপজেলার নতুন বাজারের প্রাণ আরএফএল এর ডিলার আলমাস ভ্যারাইটিজ স্টোরে বিগত ৫ বছর যাবত ডেলিভারীম্যানের চাকুরী করে আসছিলেন। আসাদ মিয়ার স্ত্রী ও আদিবা নামে ১টি তিন বছরের মেয়ে রয়েছে। সে কসবা পৌর এলাকা সাহাপাড়ায় ৫ বছর যাবত পরিবার নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করে আসছে।
ডিলার, স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত আসাদ মিয়া গত শনিবার সকাল ৮টায় মালামাল ডেলিভারী দেওয়ার জন্য বের হন। বিকাল ৫টার দিকে সে ডেলিভারী ভ্যানসহ ড্রাইভারকে পাঠিয়ে দেয় এবং বলে যে কিছু কালেকশন বাকি আছে। কালেকশন করে কিছুক্ষণ পরে আসছি। সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে তার সাথে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। পরে আজ রোববার সকালে স্থানীয় লোকজন আকছিনা গ্রামের ইটখোলার নির্মাণাধীন ভবনের পাশে তার লাশ দেখতে পায়। পুলিশ খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। নিহতের লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ধারনা করছেন মাফলার দিয়ে গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে ও মাথায় আঘাত করে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নিহত আসাদ মিয়ার স্ত্রী ডলি আক্তার (২২) এর কান্না ও আহাজারিতে থানা চত্ত¡র ভারি হয়ে ওঠে। সে বারবার বিলাপ করে তার স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চান। সে বলে আমার একটি তিন বছরের মেয়ে রয়েছে। আমার মেয়ে এতিম হয়ে গেল। আমি আমার মেয়েকে নিয়ে এখন কোথায় যাব। সে বলেন তার স্বামী বিগত ৫ বছর যাবত আলমাস স্টোরের প্রাণ আরএফএল এর ডেলিভারীম্যানের চাকুরি করে আসছে। গত শনিবার মাল ডেলিভারী করার পর বিকাল ৫টার দিকে ভ্যান ড্রাইভারকে ডিলার পয়েন্টে পাঠিয়ে দোকানে টাকা ওঠানোর জন্য যায়। সন্ধ্যার পর থেকে তার সাথে কোন যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে রাত ৮টার দিকে থানায় জিডি করতে যাই।
আলমাস ভ্যারাইটিজ স্টোরের মালিক মো. দিদারুল আলম জানান, আমি প্রাণ আরএফএলের ডিলার। নিহত আসাদ মিয়া আমার নিকট বিগত ৫বছর যাবত ডেলিভারীম্যানের চাকুরি করে আসছে। সে খুবই বিশ্বস্ততার সাথে আমার কাজ করত। সে গতকাল শনিবার সকালে মাল ডেলিভারীর জন্য বেরিয়ে যায়। বিকাল ৫টার দিকে ভ্যান ড্রাইভারকে ডিলার পয়েন্টে পাঠিয়ে সে দোকানে কালেকশনের জন্য যায়। তার কাছে কালেকশনের ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ছিল। আমি ধারনা করছি ওই টাকার লোভে দুবর্ৃৃত্তরা তাকে অপহরণ করে হত্যা করেছে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর ভ‚ইয়া জানান, স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে উপজেলার কসবা-নয়নপুর সড়কের আকছিনা গ্রামের একটি ইটখোলার নির্মাণাধীন ভবনের পাশ থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। ধারনা করা হচ্ছে গলায় মাফলার পেচিয়ে শ্বাসরোধ ও মাথায় আঘাত করে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।