কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
পদ্মা সেতু নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছে, তারা আজো বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। তারা সুদখোর, আপনাদের কাছ থেকে সুদ খেয়ে, আপনাদেরকে চুষে আপনাদের রক্ত শেষ করে দিয়েছে। তারা ওই টাকা দিয়ে বিদেশে গিয়ে কোম্পানী বানিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করে বিদেশী সিনেটরদেরকে চাঁদা দিয়ে চিঠি লেখিয়ে আনে উনার বিরুদ্ধে যেন কোন ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। বাংলাদেশে কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে এবং আদালতে যেই বিচার হবে, সেই বিচারই সকলকে মেনে নিতে হবে। আজ শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের জাজিয়ারা আশ্রয়ণ প্রকল্পে সনাতন ধর্মবলম্বী ৫২জনের গৃহে প্রবেশ ও চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডক্টর ইউনুছকে উদ্দেশ্যে করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, এ দেশে একটা চক্র আছে, তারা অন্যায় করলে তাদের গায়ে টুকাও দেওয়া যাবে না। যদি টুকা দেন তাহলে ঐযে তাদের বিদেশী বাবা-মা আছেন, তাদের কাছে গিয়ে লাফা-লাফি শুরু করবে এবং তাদেরকে কিছু টাকা দিবে আর তাদের দিয়ে চিঠি লেখা শুরু করবে। আর এদেশে উনাদের কিছু দোষর আছে ৩৪-৩৫জন, উনারা কাগজে স্ট্যাটমেন্ট দিবে উনার বিরুদ্ধে কোন কিছু করা যাবে না।
মন্ত্রী আরো বলেন, বিদেশীরা বলে বাংলাদশে সঠিক বিচার হয় না এ প্রসঙ্গে আইন মন্ত্রী বলেন, বিদেশীরা বাংলাদেশকে অপমান করবে তা আমরা সহ্য করব না। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিশেষ ট্রাইবুন্যাল গঠন করে তিন দিনের মধ্যে আমরা ফাঁসি দিতে পারতাম, আমরা কিন্তু তা করি নাই। আইনের প্রত্যেকটি ধাপ অতিক্রম করার পরেই আমরা তাদের ফাঁসির রায় কার্যকর করেছি। তাদেরকে আমরা ১৪ বছর সময় দিয়েছি। ওই সময়ে উচ্চ আদালতের সাতজন বিচারপতি বিব্রতবোধ করেছেন। আমরা তাদেরকে কিছুই বলি নাই। তারপরও আইন যা বলে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি। তবে অপরাধ করলে কেউ রেহাই পাবে না।
আরো পড়ুনঃ
তিনি বলেন, খুনিরা ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যা করে, এমনকি ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেলকেও হত্যা করে। হত্যা করার পর ইনডেনমিটি আইন করে তারা বলেছে হত্যার বিচার করা যাবে না। এ রকম কালো আইন বাংলাদেশে আর কখনো হয় নাই। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হয়েছে। কয়েকজন খুনি ছাড়া সকলের বিচারের রায় কার্যকর করে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
ডক্টর ইউনুছের মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আইন মন্ত্রী বলেন, বিচারাধীন বিষয়ে আমি কিছুই বলতে চাই না। তারপরও অন্য বিষয় নিয়ে বলতে হয়, তিনি গ্রামীণ ফোনের কর ফাকিঁ দেওয়ায় তারঁ সাড়ে ১২ কোটি টাকা জরিমানা হয়, আদালতের প্রত্যেকটি ধাপ অতিক্রম করার পর তিনি জরিমানার টাকা জমা দিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডক্টর ইউনুছকে গ্রামীন ফোনের লাইসেন্স দিয়েছেন। তিনি নরওয়ের টেলিনোরের সাথে শেয়ার ভাগা-ভাগী করে এদেশে ব্যবসা করে লাভবান হয়েছেন। ওই লাভের শতকরা পাঁচ টাকা শ্রমিকদের দেওয়ার কথা, কিন্তু তিনি তা দেন নাই। এ নিয়ে শ্রমিকরা তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
মন্ত্রী আশ্রয়ন প্রকল্প নিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন বাংলাদেশের কোন মানুষই গৃহহীন থাকবে না। বিশ্বের ১৯৩টি দেশ রয়েছে কেউ এ ধরনের ঘোষনা দিতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী ঘোষনা দিয়েছেন এবং গৃহহীনদের আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় এনেছেন।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে কসবা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সনজিব সরকারের সভাপতিত্বে এবং কুটি ইউনিয়ন পষিদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানের সহযোগীতায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদুল কাওসার ভুইয়া, কসবা পৌরসভার মেয়র মো. গোলাম হাক্কানী, কসবা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ছিদ্দিকা, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আবদুল আজিজ, মহিলা সদস্য রুমানুল ফেরদৌসী, কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাজী মো. আজহারুল ইসলাম, কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সফিকুল ইসলাম, কুটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাক আহাম্মদ, কসবা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রুস্তম খা প্রমুখ।
পরে বিকালে মন্ত্রী কুটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।