এমদাদুল হক সোহাগ, কুমিল্লা:
মুনাফা দিয়ে বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল ও এতিমখানা পরিচালনার উদ্দেশ্যে চালু হওয়া কুমিল্লা-চাঁদপুর রোডের বহুল কাঙ্খিত আইদি পরিবহন বাসগুলো কুমিল্লা অংশে ঢুকতে পারছেনা। চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ থেকে সকল প্রকার রোড পারমিট পেলেও কুমিল্লার শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারনে এবং কুমিল্লা সদর আসনের সাবেক সাংসদ আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের নির্দেশে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ থেকে রোড পারমিট না দেয়ার অভিযোগ করেছেন পরিবহনটির মালিক পক্ষ। বর্তমানে আইদি পরিবহনের ২০টি বাস চাঁদপুর জেলা সদর থেকে জগৎপুর পর্যন্ত নয়টি স্টপেজে যাত্রী পারাপার করছে, কিন্তু কুমিল্লা মহাসড়ক পেড়িয়ে শহরে প্রবেশ করতে পারছে না। এতে করে কুমিল্লা থেকে চাঁদপুরগামী যাত্রীরা বিপাকে আছেন। এ সুযোগে অন্য পরিবহনগুলো একচেটিয়া মুনাফা তুলে নিচ্ছেন।
পরিবহনটির মালিক পক্ষ বলছে সকল বৈধ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরও বিগত এক বছরেও কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রোড পারমিট পায়নি তারা। পরিবহনটির উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান পাটোয়ারী দাবি করেন, শাহরাস্তির পেয়ারা বেগম বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল ও এতিমখানা পরিচালনার লক্ষ্যে আইদি পরিবহন চালু করা হয়। তবে চালুর প্রথম থেকে রাজনৈতিক ও সিন্ডিকেটের প্রভাবে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন তারা। চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের অনুমোদন পেলেও তৎকালীন কুমিল্লার এমপি বাহাউদ্দিন বাহারের হস্তক্ষেপে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন অনুমোদন দেয়নি তাদের পরিবহনটিকে। এতে পরিবহনটি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আরেক উপদেষ্টা তাজুল ইসলাম সুমন জানান, কুমিল্লাযর জাঙ্গালিয়া বাস টার্মিনালে একটি কাউন্টার ভাড়া নিয়েছিলেন তারা। এমপি বাহারের নাম ভাঙিয়ে সেখান থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইদি পরিবহনের বাস ও কাউন্টার সরিয়ে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়। না হয় সব বাস পুড়িয়ে দিবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়। পরে আমরা সেখান থেকে চলে আসি। এখন পরিবহনটি চাঁদপুর থেকে জগৎপুর পর্যন্ত নয়টি স্টপেজে যাত্রী পারাপার করছে।’
আইদি পরিবহনের ব্যবস্থাপক মনির হোসেন জানান, ২০টি বাস বর্তমানে চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়কের জগৎপুর পর্যন্ত চলছে। আরও প্রায় ৩০টি বাস রয়েছে। কুমিল্লা পর্যন্ত রোড পারমিট পেলে সবগুলো গাড়ি উন্নত যাত্রী সেবায় নিয়োজিত করা যাবে। মনির হোসেন প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আইদি পরিবহনের রোড পারমিট দিয়েছে চাঁদপুর জেলা বিআরটিএ। আর বোগদাদ পরিবহন (কুমিল্লা-চাঁদপুর) কে দিয়েছে কুমিল্লা বিআরটিএ। তাহলে বোগদাদ যদি চাঁদপুর জেলায় ঢুকতে পারে, আমরা (আইদি পরিবহন) কেন কুমিল্লা ঢুকতে পারবে না? সকল বৈধ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আবেদন করার পরও বিগত এক বছরেও কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রোড পারমিট দেয়া হয়নি, যা খুবই হতশাজনক। তিনি দ্রুত পরিবহনটিকে কুমিল্লায় প্রবেশের জন্য সকল প্রকার রোড পারমিটের দাবী জানান।
কুমিল্লা জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ কবীর আহমেদ বলেন, জাঙ্গালিয়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে যে পরিমান জায়গা আছে তারচেয়ে বেশী বাস রয়েছে। নতুন পরিবহনের জায়গা নাই। এছাড়া কোন জেলায় নতুন বাস সার্ভিস শুরু করতে হলে তাদেরকে আগে জেলা বাস মালিক সমিতির সদস্য হতে হয়। আইদি আমাদের জেলা বাস মালিক সমিতির সদস্য হয়নি।
এ বিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট সৈয়দ শামসুল তাবরীজ জানান, আইদি পরিবহনেরও কাগজপত্র যাচাই বাছাই করা হয়েছে। এখন একটি সভা ডেকে তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।