নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগস্ট মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও বাজার স্থিতিশীল রাখতে ৫২টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লা জেলা কার্যালয়। নানা অভিযোগে প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ৮ লাখ ১২ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অধিদপ্তরের নিয়মিত তদারকি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে জেলার ৩০টি বাজারে ১৪টি স্বপ্রণোদিত অভিযান পরিচালনা করে ৪৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫শ’ টাকা জরিমানা করা হয়। আর ভোক্তাদের প্রমাণসহ দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে জরিমানা করা হয় ৮টি প্রতিষ্ঠানকে ৪১ হাজার টাকা।
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লা জেলা কার্যালয় জানায় এ মাসে লিখিতভাবে অভিযোগ আসে ৩৮টি, নিষ্পত্তি করা হয় ৩৪টি অভিযোগ। জরিমানার পাশাপাশি পণ্য ফেরতের ব্যবস্থা করা হয় ৫ জনের, আপোষ-মীমাংসা করেন ৭জন। আর পণ্যের মূল্য পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয় ৮ জনের। লিখিতভাবে অভিযোগ আসলেও আইন অনুযায়ী আমলযোগ্য হয়নি ৬টি অভিযোগ আর প্রমাণিত হয়নি ৫টি। প্রমাণিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রণোদনা হিসেবে প্রতারিত ভোক্তাদের প্রদান করা হয় ১০ হাজার ২শ’ ৫০ টাকা।
আগস্ট মাসের গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ মাসে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উৎপাদিত পণ্যের মোড়কের গায়ে দাম, উপাদান, ওজন/পরিমাণ, উৎপাদনের তারিখ বা মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ না লেখায় ২টি প্রতিষ্ঠানকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পণ্যের মূল্য তালিকা দৃশ্যমান স্থানে না টাঙানোয় জরিমানা গুনতে হয় ৭টি প্রতিষ্ঠানকে ৩২ হাজার ৫শ’ টাকা। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ভোক্তাকে সেবার মূল্য আগে থেকে সরবরাহ না করায় জরিমানা করা হয় ৮ হাজার টাকা। বেশি দামে পণ্য বিক্রির অভিযোগে ৮ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয় ১ লাখ ১৭ হাজার ৫শ’ টাকা।
খাবারে ক্ষতিকর রংসহ অপদ্রব্য মেশানোর অভিযোগে জরিমানা করা হয় চারটি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য বানানোয় জরিমানা আদায় করা হয় ২৫ হাজার টাকা। দুই খাদ্য ঋৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এ জরিমানা আদায় করেন। মিথ্যা ঘোষণা ও চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ভোক্তার সাথে প্রতারণা করায় ৫ প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ১৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভোক্তাকে প্রতিশ্রুত পণ্য না দেওয়ায় দণ্ডের মুখোমুখি হন ২ জন ব্যবসায়ী, জরিমানা আদায় করা হয় ২৩ হাজার ৫শ’ টাকা।
ওজনে কম দেওয়া ও কারচূপির কাজে ওজন পরিমাপক যন্ত্র ব্যবহার করায় জরিমানা করা হয় ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। এ সময় ৬টি ওজন পরিমাপক যন্ত্র জব্দ করে জনসম্মুখে ধ্বংস করা হয়। মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য/ঔষধ বিক্রি ও বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করায় এ মাসে ৩৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ৫ প্রতিষ্ঠানকে। আর সেবা প্রদানে অবহেলা দেখানোয় দুজনকে জরিমানা করা হয় ৮ হাজার টাকা। এ মাসে ১০ লক্ষাধিক টাকার জেলি মিশ্রিত মাছ, আইসক্রিম ও খাদ্যপণ্য জব্দ করে ধ্বংস করা হয়। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায় অধিদপ্তরের প্রশাসনিক এখতিয়ারে এ সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো: আছাদুল ইসলাম এ সকল তদারকি অভিযানের নেতৃত্ব দেন। কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সার্বিক দিক-নির্দেশনায় জেলা পুলিশের একটি সক্রিয় টিম, জেলা সিভিল সার্জন অফিসের প্রতিনিধি, জেলা খাদ্য, কৃষি, মৎস, প্রাণিসম্পদ ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রতিনিধি বিভিন্ন সময়ে অভিযানে উপস্থিত থেকে সার্বিক সহযোগিতা করেন।
ভোক্তাদের অধিকার সুরক্ষা ও বাজার ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রত্যক্ষ দিক-নির্দেশনায় এ তদারকি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।