দেশের শীর্ষস্থানীয় মিডিয়া হাউজ ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপে ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় জড়িত দুর্বৃত্তরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কুমিল্লায় কর্মরত সাংবাদিকরা। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন সাংবাদিকরা।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় কুমিল্লা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই কর্মসূচি পালন করেছেন কুমিল্লায় কর্মরত সাংবাদিকরা।
কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও একাত্তর টেলিভিশনের নিজস্ব প্রতিবেদক কাজী এনামুল হক ফারুকের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ বক্তব্য রাখেন দৈনিক ইনকিলাবের স্টাফ রিপোর্টার সাদিক হোসেন মামুন, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও সময় টিভির সাংবাদিক বাহার উদ্দিন রায়হান, দৈনিক আজকের কুমিল্লার সম্পাদক ও কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদ জিতু, বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি মহিউদ্দিন মোল্লা, কালবেলার জেলা প্রতিনিধি আতিকুর রহমান, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নেকবর হোসেন, বাংলানিউজের জেলা প্রতিনিধি তৈয়বুর রহমান সোহেল, দৈনিক নবচেতনার জেলা প্রতিনিধি ফজলুল হক জয়, কালের কণ্ঠের চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি আবুল বাশার রানা প্রমুখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন- কালের কন্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, নিউজ ২৪ টেলিভিশ, বাংলানিউজসহ ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের সাতটি প্রতিষ্ঠান দেশের প্রথম সারির মিডিয়া হিসেবে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করছে। তাদের প্রতিটি মিডিয়াই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে আসছে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারী ও সন্ত্রাসীরা চায় গণমাধ্যমকে দাবিয়ে রাখতে। এজন্য গত ১৯ আগস্ট পরিকল্পিতভাবে দেশের শীর্ষস্থানীয় মিডিয়া হাউজ ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপে ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। কিন্তু ঘটনার এক মাস পার হলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন সেই দুর্বৃত্তরা। এরই মধ্যে গণমাধ্যমে হামলাকারীদের ছবি প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এরপরও তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। এতে সাংবাদিকদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা হামলাকারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করছি।
কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক বলেন, আজকের আগেও আমরা এ ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছিলাম। কিন্তু বিচার পাইনি৷ গণমাধ্যমের অফিস কিংবা গাড়ির উপর যখন হামলা হয়, তখন আমরা বলবো সেটা রাষ্ট্রের চতুর্থস্তম্ভরে ওপর হামলা করা হয়েছে। গণমাধ্যমে হামলাকারীদের মুখোশ খুলে যখন ছবি ছাপানো হলো, তা-ও এখনো সেই হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বলবো, গণমাধ্যম বাঁচলে, রাষ্ট্র বাঁচবে। তাই অবিলম্বে সেই দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচার করুন এবং আইনের শাসনের কায়েম করুন। আরো দাবি জানাই, অবিলম্বে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
জেলার জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক সাদিক হোসেন মানুষ বলেন, গণমাধ্যমের উপর হামলার কোন সুষ্ঠু রায় আজ অবধি কখনো হয়নি। বিচার কার কাছে দেবো আমরা। তবে আমরা বিশ্বাস করি এখন দেশ স্বাধীন হয়েছে, বিচার করার জায়গা হয়েছে। আমরা মনে করি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই বিষয়গুলো দেখবেন। তাই আমরা সেই বিশ্বাসের জায়গা থেকে দাবি জানাই, গণমাধ্যমের উপর এমন হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদ জিতু বলেন, সাংবাদিকরা বাড়াবাড়ি করলে তাদের শাস্তি হবে। কিন্তু মিডিয়া হাউজে হামলা কেন? দুই একজন ব্যক্তির জন্য পুরো মিডিয়া হাউজ আক্রান্ত হতে পারে না। প্রতি সরকারের আমলেই মিডিয়া হাউজের গলা চেপে ধরা হয়েছে। দোষীদের শাস্তি দিন, নয়তো এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার চর্চা চলতেই থাকবে। বাংলাদেশে মিডিয়া কখনো স্বাধীন ছিলো না, আমরা স্বাধীন মিডিয়া চাই।
কালের কন্ঠের কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি আবদুর রহমানের সঞ্চালনায় সমাবেশে অংশগ্রহণ করে হামলার প্রতিবাদ জানান প্রথম আলোর জেষ্ঠ্য ফটো সাংবাদিক এম সাদেক, প্রথম আলোর- কুমিল্লার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা জুয়েল, গ্লোবাল টেলিভিশনের কুমিল্লা প্রতিনিধি সাইফ উদ্দিন রনি, জাগরণী টিভির কুমিল্লা প্রতিনিধি ও কুমিল্লা ফটো সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আশিকুর রহমান, বণিক বার্তার জেলা প্রতিনিধি মীর হোসেন মীরু, আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি জহিরুল হক বাবু, দৈনিক রূপসী বাংলার স্টাফ রিপোর্টার ফারুক আজম, কুমিল্লার বার্তার সম্পাদক শামছুল আলম রাজন, দৈনিক পূর্বাশার সিনিয়র রিপোর্টার হাবিবুর রহমান মুন্না, দৈনিক কুমিল্লার জমিনের সিনিয়র রিপোর্টার জাহিদ হাসান নাইম, দৈনিক আমাদের কুমিল্লার স্টাফ রিপোর্টার এম হাসানসহ আরো অনেকে।