এমদাদুল হক সোহাগ:
কুমিল্লার স্বনামধন্য কনসালট্যান্ট সনোলজিস্ট ডা. মল্লিকা বিশ্বাস করোনাকালে নিয়মিত রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। করোনা মহামারিতে নিজেকে সুরক্ষিত রেখে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। আন্ট্রাসনোগ্রাফীর ক্ষেত্রে রোগীকে স্পর্শ ও সরাসরি কথা বলতে হয় বলে নগরীর অনেক সনোলজিস্ট সাময়িক রোগী দেখা বন্ধ করে দেওয়া অথবা অনিয়মিতভাবে রোগী দেখায় আগের চেয়ে রোগীর চাপ কিছুটা বেড়েছে । প্রতিদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোগী দেখতে হয় তাকে। কুমিল্লা নগরীর সিডি প্যাথ এন্ড হসপিটালের দ্বিতীয়তলায় গিয়ে দেখা যায়, আল্ট্রাসনোগ্রাফি রুমের সামনে প্রচুর রোগী অপেক্ষমান। একের পর এক রোগী দেখছেন। একজন রোগী দেখতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে। গর্ভবতী ও জটিল রোগীদের ক্ষেত্রে আধাঘন্টারও বেশী সময় লাগে।
তিনি বলেন, এ সময় রোগীদের সেবা না দিলে তারা কোথায় যাবে। একজন চিকিৎসকের দায়িত্ব হচ্ছে রোগীদের সেবা দেয়া। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই আমি রোগী দেখে যাচ্ছি। নিজেকে সুরক্ষিত রেখেই কাজ করছি। যদিও এ মুহূর্তে আল্ট্রাসনোগ্রাফি একটি ঝুকিপূর্ণ কাজ কারণ, রোগীদের স্পর্শ করতে হয়, খুব কাছ থেকে কথা বলতে হয়। সেজন্য নিজেকে সুরক্ষিত রেখে সেবা প্রদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
ডা. মল্লিাকা বিশ্বাস গত বছর রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অব এডিনবার্গ থেকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ – এফআরসিপি ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি টাঙ্গাইল জেলার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- ধরণীকান্ত বিশ্বাস। মাতা- বিজলী বিশ্বাস।
তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৯০ সালে এমবিবিএস পাস করেন। পরবর্তী সময়ে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে রেডিওলোজি ও ইমেজিং এ পোস্টগ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা করে দেশে ফিরে আসেন। তিনি ১৯৯৩ সাল থেকে অদ্যাবধি কুমিল্লা সিডি প্যাথ এন্ড হসপিটালে কনসালটেন্ট সনোলজিস্ট হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি একজন ক্লিনিক্যাল আল্ট্রাসনোগ্রাফির শিক্ষক। ডা. মল্লিকা বিশ্বাস বাংলাদেশ সোসাইটি অফ আল্ট্রাসনোগ্রাফি কুমিল্লার সভাপতি। তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত। হৃদরোগ প্রতিরোধ, চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান হার্ট কেয়ার ফাউন্ডেশন, কুমিল্লা, বাংলাদেশ এর সহ-সভাপতি এবং নারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইনার হুইল কাব অব কুমিল্লার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি বিশ্বের সর্ববৃহৎ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান রোটারি ইন্টারন্যাশনাল থেকে পল হ্যারিস ফেলো (পি.এইচ.এফ) সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। এছাড়াও তিনি একজন সফল চিকিৎসক হিসেবে ‘ছায়ানীড়’ এর গুণীজন সন্মাননা পেয়েছেন। তিনি জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি। তাঁর লেখা রবীন্দ্র সাহিত্য ও সংগীত বিষয়ক প্রবন্ধ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হয়।এই পযর্ন্ত তার চারটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি কুমিল্লার বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ এবং ময়নামতি মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. তৃপ্তীশ চন্দ্র ঘোষ এর সহধর্মিনী। তিনি দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জননী। করোনা মহামারিতে অধ্যাপক ডা. তৃপ্তীশ চন্দ্র ঘোষও রোগীদের নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন।