কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের নিরীহ যুবকদের মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে হয়রানী করেছেন ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ইয়াছিন মিয়া ও তার লোকজন। বুধবার (৩১ মে) সকালে বাউরখন্ড বাজারে ৫ গ্রামের তিন শতাধিক নারী পুরুষ মানববন্ধন করে রোমন খানসহ তার স্বজনদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তাগন বলেন, ২০২২ সালে মুলগ্রাম ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রবাসী ইয়াসিন মিয়া ও তার ঘনিষ্ঠজনরা নির্বাচনে পাশ করেই প্রতিপক্ষদের হয়রানী শুরু করে। ইয়াছিনের চাচাতো ভাই লোকমান মাদক ব্যবসায় জড়িত। গ্রামের জনৈক সমাজকর্মী রুমন খানের চাচা ইয়ার খানের সংগে নির্বাচন ও মাদক ব্যবসা নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে গত ১৮ ফেব্রæয়ারি ইয়ার খানকে কুপিয়ে তার হাতের কব্জি কেটে ফেলে ইয়াছিন মেম্বারের চাচাতো ভাই ও অন্যন্যরা। বিষয়টি সামাজিকভাবে নিস্পত্তি করবে এমন কথা বলে সময়ক্ষেপন করেন স্থানীয় সাহেব সর্দারগন। তাদের আশ^াসে ইয়ার খান কোনো মামলা করেননি।
এদিকে গত ৩ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ৫/৬ জন যুবক ইয়ার হোসেন খানকে সাদা পোশাকে গ্রেপ্তার করে গাড়িতে উঠিয়ে নিতে চাইলে বাড়ির লোকজন ডিবি পুলিশের পরিচয় পত্র দাবী করে। এমতাবস্থায় ৩ জন পালিয়ে গেলেও নবীনগর উপজেলার নোয়াগাও গ্রামের সেন্টু মিয়ার পুত্র কালু মিয়া ও আওয়াল মিয়ার পুত্র মান্না মিয়া নামে ২ জনকে আটক করে কসবা থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে গ্রামবাসী। ইয়ার হোসেন খান আটককৃতদের বিরুদ্ধে থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ দিলে পুলিশ অভিযোগ আমলে না নিয়ে তাদের ৫৪ ধারায় কোর্টে চালান দেয়।
ইয়ার খান আরও জানান, গত ২৮ এপ্রিল শুক্রবার জুমার নামাজের সময় পাশ^বর্তী হাতিনা বিলে ইয়াছিন মেম্বারকে হামলা করে তার মোটর সাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন ইয়ার হোসেন খান ও রুমন খানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় হয়রানীর শিকার ভুক্তভোগীরা। অথচ ভুক্তভোগীদের দাবী ওই দিন এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। মিথ্যা মামলা ও হয়রানী থেকে রেহাই পেতে এলাকার সাংসদ আইনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন।
গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান, ছোটন মিয়া ও আমেনা বেগমসহ আরও লোকজন জানান, ইয়াছিন মেম্বার ওমানে ব্যবসা করেন। তিনি অনেক টাকা পয়সার মালিক। থানা পুলিশকে বাধ্য করে মিথ্যা মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানী করেন। সে প্রবাসে থাকায় সকল প্রকার সেবা কার্যক্রম থেকে আমরা বঞ্চিত।
মুলগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মো.জালাল উদ্দিন রুমি জানান, ১ নং ওয়ার্ড সদস্য ইয়াছিন খান মৌখিকভাবে জানিয়ে প্রবাসে গিয়েছেন । তবে এটা নিয়ম বহির্ভুত।
কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। প্রযুক্তির সহায়তায় সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আমিমুল এহসান খান জানান, একজন জনপ্রতিনিধি অনুমতি ব্যতিত বিদেশ যাওয়া বা বিদেশে অবস্থান করা অপরাধ। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ইয়াছিন খান দায়িত্ব ফেলে প্রবাসে অবস্থান করায় তার চাচাতো ভাই লোকমান হোসেন জানান, তুচ্ছ ঘটনায় ইয়ার হোসেন খান দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়িতে গেলে দুই পক্ষের ঝগড়ায় ইয়ার হোসেন আহত হয়।