এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে দফায় দফায় অর্থ আদায়ের অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার পাঁচ পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলেন এক ভূক্তভোগী। অভিযুক্তরা হলেন জেলার আখাউড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুতিউর রহমান, এসআই হুমায়ুন কবীর, সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) খোরশেদ আলম এবং কনস্টেবল প্রশান্ত ও সৈকত। আদালত অভিযোগের আমল গ্রহণ করে ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে পুলিশ সুপার কার্যালয়কে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন।
বুধবার (১২ আগস্ট) দুপুরে জেলার আখাউড়া উপজেলা সদরের মসজিদপাড়ার বাসিন্দা হারুন মিয়া বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আখাউড়া) আদালতে মামলাটি (নং সি.আর-৮৯/২০) দায়ের করেন। আগামী ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেয় আদালত। তবে পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্র জানায়, বিষয়টি তাদেরকে অফিসিয়ালি জানানো হয়নি।
মামলার বিরণীতে জানা যায়, আখাউড়ার পৌর শহরের মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা হারুনের প্রতিবেশী হাসিনা বেগম (চিকুনী বেগম) ও তার মেয়ে তানিয়া এবং তানজিনার সাথে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা একযোগে মিলিত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদকের ব্যবসা করে আসছে। হারুন প্রতিবেশী চিকুনীর মাদক ব্যবসায় বাঁধা দিলে চিকুনী ক্ষুদ্ধ হয়ে থানা পুলিশকে হারুনের পিছনে লেলিয়ে দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ মে গভীররাতে অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্য নাটকীয়ভাবে চিকুনী বেগমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তার প্ররোচনায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওই পুলিশ সদস্যরা হারুনের বাড়িতে প্রবেশ করে তল্লাশির নামে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এসময় ক্রসফায়ার ও হত্যার ভয় দেখিয়ে ঘরে থাকা নগদ ৪০ হাজার টাকা বলপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। এছাড়াও তারা ঘরের আসবাবপত্র উলট পালট করে নাজেহাল অবস্থা সৃষ্টি করে। পরে ওইদিনই ভোর চারটার দিকে পুনরায় ওই পুলিশ সদস্যারা এসে হারুন ও তার স্ত্রীকে মিথ্যা মাদক মামলা ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ভয় দেখিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে এক লাখ টাকা দাবী করেন। তা না হলে তাদেরকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কোর্টে চালান দেয়া হবে বলে হুমকী দেয়। তখন তারা প্রাণ রক্ষায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের সাথে ৫০ হাজার টাকার রফাদফা করলে হারুন ও তার স্ত্রীকে ছেড়ে দেয়। তবে চলে যাওয়ার সময় বিষয়টি উপরের অফিসারদের জানালে হারুনকে ক্রসফায়ার দেয়া হবে বলে হুমকি দেন। মামলার বাদী হারুন মিয়া বলেন, ‘অভিযুক্তরা আমাকে বিভিন্ন সময় ক্রসফায়রে ভয় দেখিয়ে ধাপে ধাপে টাকা নিয়েছে। তাদের কারণে আজ আমি বাড়িছাড়া। ন্যায় বিচারের আশায় আদালতে অভিযোগ দিয়েছি।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত অফিসিয়ালি আমাদেরকে কিছুই জানানো হয়নি।