প্রথমবারের মত মানব জিনের পূর্ণাঙ্গ বিন্যাস উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় দুই দশক ধরে গবেষণার পর টেলিমোর টু টেলিমোর (টি২টি) কনসোর্টিয়ামের প্রায় ১০০ জন বিজ্ঞানীদের একটি দল মানব জিনের পূর্ণাঙ্গ বিন্যাস উন্মোচন করতে সক্ষম হন বলে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষক দলের প্রধান ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাওয়ার্ড হিউস মেডিকেল ইনস্টিটিউটের ইভান ইচলার বৃহস্পতিবার মানব জিনের পূর্ণাঙ্গ বিন্যাস উন্মোচনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সম্পূর্ণ এই তথ্য উন্মোচনের ফলে এখন আমরা আরও ভালোভাবে বুঝতে পারব, কীভাবে মানুষের একটি আলাদা প্রাণীসত্তা হিসেবে অস্তিত্ব হয়েছে। কীভাবে মানুষ কেবল অন্য মানুষ থেকে নয়, অন্য জীব থেকেও আলাদা।
সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সম্পূর্ণ এই জিনোম সিকোয়েন্সের মাধ্যমে দেখা যাবে কীভাবে একজন মানুষের ডিএনএ আরেকজনের থেকে ভিন্ন হয় এবং এই জেনেটিক বৈচিত্র্য রোগের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে কিনা তাও জানা যাবে।
এ ব্যাপারে গবেষক দলের প্রধান ইচলার বলেন, এই জিনগুলো অভিযোজনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে এমন জিন আছে, যা বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার বিষয়টি নির্ধারণ করে। এসব জিনের কারণেই বিভিন্ন সংক্রামক রোগের জীবাণু ও ভাইরাসের সঙ্গে খাপ খাইয়ে বেঁচে থাকতে পারি আমরা। এমন জিন রয়েছে, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, ওষুধের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে তা আগেই বুঝতে সাহায্য করে এসব জিন।
তিনি জানান, সর্বেশষ উন্মোচিত বিন্যাসে কিছু জিন রয়েছে, যেগুলোর কারণে মানুষের মগজ অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের চেয়ে আকারে অনেক বড় হয়েছে। আর এ বিষয়টিই মানুষকে অন্য প্রাণীর চেয়ে অনন্য করে তুলেছে।
হিউম্যান জিনোম প্রজেক্ট ২০০৩ সালে মানুষের জিন বিন্যাসের ৯২ শতাংশ উন্মোচন করেছিল। কিন্তু বাকি ৮ শতাংশের বিশ্লেষণ করতে বিজ্ঞানীদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।