কসবায় সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

কসবা (ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার কসবায় কুটি ইউনিয়নের ইয়াকুবনগরে ভূমি দখল, চাঁদাবাজির অভিযোগে গৌরিপুর গ্রামের সেনা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলাম গংদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগিদের পক্ষে শনিবার (২৭ মার্চ) সকাল ১১টায় কসবা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন গঙ্গানগর গ্রামের মো. ফারুক ইসলাম। ফারুক ইসলাম ব্র‏া‏হ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ সদস্য ও গঙ্গানগর গ্রামের আলহাজ্ব আইয়ুব আলী ভূইয়ার পুত্র। সংবাদ সম্মেলনে ফারুক ইসলাম অভিযোগ করেন, কুটি ইউনিয়নের গৌরিপুর গ্রামের সেনা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলামের নির্দেশে গত ১৩ মার্চ বিকেলে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে গঙ্গানগর গ্রামের শাহজাহানকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় শাহজাহান গত ০১ মার্চ ঢাকা মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের মেজর জেনারেল মো. জোবায়ের সালেহিন বরাবর প্রতিকার চেয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. ফারুক ইসলাম। তিনি অভিযোগ করেন গৌরিপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের জামাতা সেনা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম ও তার পুত্রত্রয় রুহুল আমিন, নুরুল ইসলাম, নেওয়াজ শরীফ ও তাদের সহযোগী সন্ত্রাসী দুলাল মিয়ার নেতৃত্বে ইয়াকুবনগর ফিশারিজ এন্ড এগ্রো প্রকল্পের সীমানা ২০ফুট ভিতরে এনে সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে নেয়। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, শরৎনগর গ্রামের আমেরিকা প্রবাসী এড. জিএম শহিদুল্লাহ ও লেশিয়ারা গ্রামের মো. শিশু মিয়া গংদের জমি ১৫/২০ বছর যাবত দখল করে রাখছে আশরাফুল ইসলাম গং।

ফারুক ইসলাম জানান, গত ২২ অক্টোবর এলাকার সাহেব সর্দারগনের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের ৭জন সার্ভেয়ার দিয়ে সীমানা নির্ধারন করে খুটি বসানো হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ওই ভূমিদস্যুরা রাতের অন্ধকারে সীমানা পিলার তুলে ফেলে এবং আমাদের জায়গার ২০ ফুট ভিতরে সীমানা খুটি বসিয়ে দখল করে নেয়। সংবাদ সম্মেলনে ফারুকের চাচা শাহজাহান অভিযোগ করে বলেন, গত ফেব্রæয়ারি মাসে মীমাংসার নামে দুলালের মাধ্যমে ২০ লক্ষ টাকা তার নিকট চাঁদা দাবি করেন ওই সেনা সদস্য আশরাফুল ইসলাম।

ভুক্তভোগিদের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন,আবদুল বারেক ভূইয়া, মো. তাজুল ইসলাম, গাজী মো. বিল্লাল, ওসমান মিয়া, ঝর্ণা আক্তার, মো. জাহাঙ্গীর, মো. শিশু মিয়া, মো. শাহজাহান মিয়া ও কুদ্দুছ মিয়া। ভুক্তভোগিরা আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ বিষয়ে সেনা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলামের অনৈতিক কর্মকান্ড, জমি দখল, চাঁদাবাজি, ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে গত ০১ মার্চ ঢাকা মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের মেজর জেনারেল মো. জোবায়ের সালেহিন বরাবর ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এতে সেনা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম গং আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের মেরে ফেলার হুমকী দেয় বলে শাহজাহান জানান। মেরে ফেলার হুমকীর ঘটনাও মেজর জেনারেলকে ১৫ মার্চ লিখিতভাবে জানানো হয়।

এই বিষয়ে যোগাযোগ করলে দুলাল মিয়া মুঠোফোনে জানান, তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন। এলাকায় তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

এ বিষয়ে গতকাল বিকেলে আশরাফুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিগত ৩ বৎসর যাবত তিনি এলাকায় আসেননি। ২০১৯ সালে ১৮ অক্টোবর তার শ্বশুর আব্দুর রশিদ মারা যাওয়ার পর তার নামাজে জানাজায় এসেছিলেন। গৌরিপুর গ্রামে ৪৩ শতাংশ জায়গা ছাড়া আমার কোন সম্মত্তি নেই। আমার শ্যালক রুহুল আমিন, নুরুল ইসলাম ও নেওয়াজ শরীফের বেশকিছু জায়গা জমি রয়েছে ইয়াকুবনগর এলাকায়। এসব জায়গা নিয়ে আইয়ুব আলী ভূইয়ার সাথে সীমানা নিয়ে তাদের বিরোধ রয়েছে। আমার সাথে তাদের কোন বিরোধ নেই। তিনি বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

Post Under