ভারতের আনন্দবাজার সূত্রে জানা যায়,
হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে বরবেশে বেরিয়ে এলেন এক যুবক। করিডরে অপেক্ষা করছিলেন বেনারসি শাড়ি, গয়না, রজনীগন্ধার মালায় সজ্জিতা কনে। হাসপাতালের কর্মীরা তখন ব্যস্ত উলুধ্বনি দিতে। বরণডালা আর প্রদীপ নিয়ে এগিয়ে এলেন চিকিৎসকরা। উপহার হাতে উপস্থিত রাজ্যের মন্ত্রী-চিকিৎসক নির্মল মাজি। মঙ্গলবার দুপুরে হাওড়ার ফুলেশ্বরের একটি করোনা হাসপাতালের দৃশ্য। বিয়ের পরদিনই যুবকটি করোনা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। এখন তিনি সুস্থ। করোনা জয়ী যুবক হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে নববধূর সঙ্গে বাড়ি ফিরলেন।
বছর সাতাশের এই যুবক হাওড়া কোনা মালিকপাড়ার বাসিন্দা। হাওড়া দাসনগর থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করেন। ২ জুন হুগলির মশাটের যুবতীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। ওই রাতেই তাঁরা কোনার বাড়িতে ফিরে আসেন। ৪ জুন তাঁদের বৌভাতের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই আসে দুঃসংবাদ। দাশনগর থানা পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ারের করোনা পরীক্ষা করিয়েছিল ২৯ মে। ৩ জুন রিপোর্টে দেখা যায়, ওই যুবক করোনায় আক্রান্ত। ওই দিনই সন্ধ্যায় তাঁকে ভর্তি করানো হয় ফুলেশ্বরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বৌভাতের অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে যায়। নববধূ চলে যান তাঁর বাপের বাড়িতে নিভৃতবাসে। কোনও উপসর্গ দেখা না দেওয়ায় তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়নি। ওই যুবক ১৪ দিন হাসপাতালে থাকার পর সুস্থ হন। এ দিন তাঁকে নিতে নববধূর সাজে হাসপাতালে আসেন তাঁর স্ত্রী। যুবক বলেন, ‘‘থানার নিয়ম অনুযায়ী করোনা পরীক্ষা হয়েছিল। বিয়ের দিন আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। আমি ভেবেছিলাম, রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে। রিপোর্ট পেয়ে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বাড়ির সকলেই খুব ভেঙে পড়েছিলেন। আজ খুব আনন্দ হচ্ছে।’’
তাঁর স্ত্রীও বলেন, ‘‘বিয়ের পরদিন স্বামী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনে খুব ভেঙে পড়েছিলাম। নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ রাখতাম।’’ হাসপাতালের চিকিৎসক শুভাশিস মিত্র বলেন, ‘‘নববধূর কাছে তাঁর স্বামীকে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুবই আনন্দ হচ্ছে।’’