শেখ ফাহিম ফয়সাল
পবিত্র ক্বাবা যে কাপড় দ্বারা আবৃত থাকে, তাঁকে বলে “কিসওয়া”। চলুন দেখে আসা যাক, কোন যুগে কিসওয়া’র রঙ কেমন ছিলো?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে কিসওয়াঃ
একটি লাল ও সাদা ডোরাকাটা ইয়েমেনি কাপড় থেকে তৈরি করা হয়েছিল। কালো এবং লাল বর্ডার লাইন দিয়ে।
খোলাফায়ে রাশিদিন এর আমলে কিসওয়াঃ
হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ), হযরত উমর ফারুক (রাঃ), হযরত উসমান জিন্নুরাইন (রাঃ) এবং হযরত মওলা আলী (রাঃ) এর সময়ে কিসওয়া সাদা রঙিন মিশরীয় কাপড় থেকে নির্মিত হতো।
আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়েরের যুগেঃ
একটি লাল সিল্কের কাপড়ের উপর কাজ করা সাদা রেশমি কাপড় দ্বারা পবিত্র কাবা আবরণ করা হতো।
আব্বাসীয় যুগেঃ
সাদা এবং পরবর্তী সময়ে লাল রঙে রঙিন ছিলো ক্বাবা শরীফ।
সেলজুকদের যুগঃ
একটি সুবর্ণ স্বর্ণাভ বাদামী রঙের (প্রায় হলুদ রঙের) কিসওয়াহ পবিত্র ক্বাবা আবরণ করতে ব্যবহৃত হতো।
আব্বাসীয় খলিফা আল-নাসিরের যুগেঃ
পবিত্র ক্বাবাঘরকে কাপড়ে মুড়ে সাজানোর জন্য সবুজ রঙের কাপড় ব্যবহার করা হতো।
খলিফা আল-নাসিরের যুগ থেকেই বর্তমান পর্যন্ত কালো রঙ স্থায়িত্বকরণ হয়েছে। তাঁর আমলে সুচারুরূপে স্বর্ণালি এম্ব্রয়ডারি’র সাথে কালো রেশমের কাপড় (সিল্কের কাপড়) ব্যবহার করা হয়।
বিশুদ্ধ সিল্ক কাপড় ইতালি থেকে আমদানি করা হয়।
বিভিন্ন শাসক ও খলিফার আমলে পবিত্র কাবার রঙের বিবর্তন ঘটেছে। রাসুল ﷺ এর জীবদ্দশায় কিসওয়া সাদা ছিল। তারপর এটি লাল, তারপর সবুজ এবং অবশেষে বর্তমানে কালোতে পরিবর্তিত হয়েছে।
বছরের পর বছর ধরে, অনেক দেশ কিসওয়াহ কাপড়ের সরবরাহকারী হয়েছে মোহাম্মদ আলি পাশা। একজন মিশরীয় ভাইসরয়, কিসওয়াহ তৈরির প্রক্রিয়া তৈরি করেছিলেন।
তুর্কি সাম্রাজ্য থেকে বিভক্ত হওয়ার পর মোহাম্মদ আলি পাশা প্রতি বছর কাজটি যাতে সফল হয় তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেন। খুব কম লোকই জানে যে পবিত্র কিসওয়ার আবরণ তৈরি করতে ব্যবহৃত সেই অনন্য কাপড় সাধারণত বাগদাদ, ইয়েমেন, ইরাক এবং মিশর থেকে আসতো।
তবে বর্তমানে সিল্কের কাপড় ইতালি থেকে আমদানি করা হয়। এবং রুপা ও স্বর্ণের সুতা জার্মানি থেকে কেনা হয়।
তথ্য সংগ্রহকারী
সঙ্গীতশিল্পী, গবেষক ও প্রবন্ধকার।