আজ ১১ অক্টোবর ২০২০ কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার গল্লাই ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে কুমিল্লা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের আয়োজনে নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ক সচেতনতামূলক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্যগণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, সাংবাদিকবৃন্দ, মাদ্রাসার শিক্ষক, ইমাম ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ ৩০ জন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে অভিবাসী তথ্য কেন্দ্র বাংলাদেশ (এমআরসি) এ আয়োজনে সার্বিক সহায়তা প্রদান করে।
জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, কুমিল্লা-এর সহকারী পরিচালক জনাব দেবব্রত ঘোষ তাঁর উপস্থাপনায় নিরাপদ, নিয়মিত, সুশৃঙ্খল এবং দায়িত্বশীল অভিবাসন নিশ্চিতকরণ, মানব পাচার রোধ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রক্রিয়ায় মধ্যসত্বভোগীদের দৌরাত্ব নিরসন, উচ্চ অভিবাসন ব্যয় হ্রাস, অভিবাসী কর্মীর অধিকার সুরক্ষা, অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তা এবং কল্যাণ নিশ্চিতকরণে বর্তমান সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা ব্যক্ত করেন।
তিনি বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা ও সচেতনতার গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, জেনে বুঝে, প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ হয়ে বিদেশ গেলে, অর্থ-সম্মান দুটোই পাওয়া যাবে। মিথ্যা তথ্যের উপর নির্ভর করে বা অন্যের প্রলোভনে বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত না নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়াও তিনি নিরাপদ অভিবাসনের বিভিন্ন আইন, বিধি ও নীতিমালা নিয়ে আলোচনা করেন এবং করোনাকালীন দূর্যোগ মোকাবিলায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রাণালয়ের বিভিন্ন কল্যাণমূলক উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। এছাড়াও নারী অভিবাসনের ঝুঁকি, সম্ভাবনা এবং সুবিধাসমূহ উল্লেখ করেন।
কর্মশালায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, বোয়েসেল, বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে অবস্থিত শ্রম কল্যাণ উয়িং এবং বায়রা’র কার্যক্রম নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়।
গল্লাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব মো: জসিম উদ্দিন তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যে অংশগ্রহনকারীদের উৎসাহিত করার জন্য এই ধরণের অনুষ্ঠানের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ইউনিয়ন পরিষদ সরকারের যে কোন ধরণের তথ্য প্রচার ও প্রসারে সব সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিরাপদ অভিবাসন বিষয়েও ইউনিয়ন পরিষদ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি প্রত্যেক উপজেলায় ০১ টি করে টিটিসি স্থাপনের প্রস্তাব দেন।
কর্মশালায় এমআরসি বাংলাদেশের কাউন্সেলর জনাব গোলাম মোস্তফা মানব পাচার এবং তা রোধে ইউনিয়ন পরিষদের করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়াও অভিবাসনের নানা দিক এবং অভিবাসী তথ্য কেন্দ্র বাংলাদেশের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কার্যাবলি তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে কুমিল্লা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারি পরিচালক জনাব দেবব্রত ঘোষ অংশগ্রহণকারী সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং জনসাধারণের ভোগান্তি, প্রতারণা রোধে কার্যকর ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানান। এছাড়া বিস্তারিত তথ্যের জন্য www.probashi.gov.bd, www.bmet.gov.bd, www.wewb.gov.bd, www.bmet.comilla.gov.bd সাইটগুলো ভিজিট করার পরামর্শ দেন তিনি।
কর্মশালায় আরো জানানো হয় যে, অভিবাসন বিষয়ে যেকোন তথ্য ও পরামর্শের জন্য এমআরসি বাংলাদেশের হেল্পলাইন নম্বর: ০১৭১৩০৮৬৩৩০ (কুমিল্লা) এবং ০১৭৩০৬৬৬৯৩৬ (ঢাকা) নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়। এছাড়াও অভিবাসন বিষয়ে যেকোন তথ্য ও পরামর্শের জন্য এমআরসি বাংলাদেশের ফেসবুক ফেইজ (facebook.com/bangladeshmrc) থেকেও অভিবাসন বিষয়ে যেকোন তথ্য পাওয়া যাবে বলে কর্মশালায় জানানো হয়।
০৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত কুমিল্লা জেলার ১০টি উপজেলার ২০টি ইউনিয়নে ১ (এক) দিন করে এই সচেতনতামূলক কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হবে।