এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ডাকাতিকালে গৃহবধূ রেজিয়া বেগমকে জবাই করে হত্যা মামলার রায়ে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শফিউল আজম অভিযুক্ত চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জেলার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের পূর্বপাড়ার আব্দুল আলিমের পুত্র আল আমিন, নুনু মিয়ার পুত্র জান্নাত, হোসেন পাঠানের পুত্র সোহেল পাঠান ও পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণমুড়া গ্রামের আবুল কাশেমের পুত্র মো. ইব্রাহীম। তাদের মধ্যে জান্নাত এবং সোহেল পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে কসবা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের পূর্বপাড়ার শাহ আলমের বসতঘরের পূর্বদিকের সিঁদ কেটে আল আমিন, জান্নাত, সোহেল ও ইব্রাহীমসহ অজ্ঞাতনামা তিন থেকে চারজন ভেতরে প্রবেশ করে। তাদের হীনকর্মে বাঁধা দেয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে হাত-পা বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে গৃহবধূ রেজিয়া বেগমকে হত্যা করে। ঘটনা দেখে চিৎকার শুরু করলে তারা রেজিয়ার শিশুপুত্র মাসুক মিয়াকে মারধর করে। এক পর্যায়ে মাসুক সেখান থেকে ছুটে বাইরে গিয়ে চিৎকার শুরু করে। পরে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে। এই ঘটনায় নিহতের ভাই আবুল খায়ের বাদী হয়ে পরদিন কসবা থানায় মামলা দায়ের করনে। মামলা হবার পরপরই পুলিশ আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আল আমিন ২৩ সেপ্টেম্বর আদালতে প্রদত্ত ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নারকীয় এই ঘটনার সাথে অপর তিনজনের জড়িত থাকার বিষয় নিশ্চিত করেন। এর কিছুদিন পর পুলিশ কসবা উপজেলার ধজনগর সীমান্ত থেকে ভারতে পালিয়ে থাকা ঘটনার অন্যতম হোতা মো. ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীটে দায়ের করেন। মামলার যুক্তিতর্কে আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ঘটনার পাঁচ বছরের মাথায় বুধবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শফিউল আজম প্রদত্ত রায়ে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। মামলার বাদী আবুল খায়ের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।