চাঁদপুরে ৬১ লাখ টাকা পেয়েও ফিরিয়ে দেওয়া তরুণকে মুঠোফোনে ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশের পক্ষ থেকে সততার পুরস্কার হিসেবে একটি অটোরিকশা কিনে দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদ পারভেজ চৌধুরীর উপস্থিতিতে তাঁর কাছে অটোরিকশাটি হস্তান্তর করা হয়। এটির দাম ৬৫ হাজার টাকা।
ওই তরুণের নাম সজীব সরদার (১৮)। তিনি চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার হরিসভা এলাকার দেলোয়ার সরদারের ছেলে। গত রোববার তাঁর অটোরিকশায় ৬১ লাখ টাকার একটি ব্যাগ ফেলে গিয়েছিলেন চাঁদপুরে বিকাশের পরিবেশক আলমগীর হোসেন।
জানতে চাইলে আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমি বিকাশের পক্ষ থেকে সজীবকে সততার পুরস্কার হিসেবে একটি পুরোনো অটোরিকশা কিনে দিয়েছি। তা ছাড়া এই অর্থ ফিরে পেতে সহযোগিতা করায় পুরান বাজারের বাদল নামের আরেকজনকে পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার দিয়েছি।’
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, রোববার চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা তোলেন বিকাশের পরিবেশক আলমগীর হোসেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বিকাশের হিসাবরক্ষক মাসুদকে টাকাগুলো শহরের জোড়পুকুরপাড়ে আনতে বলেন। মাসুদ টাকার পাঁচটি ব্যাগের একটি ভুলে অটোবাইকে রেখে নেমে যান। তাতে ৬১ লাখ টাকা ছিল। জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) বিষয়টি জানতে পেরে সেখানকার সিসি ক্যামেরায় ওই অটোচালক ও বাইকের ছবি সংগ্রহ করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়। বিকেলে পুরানবাজারের বাদল নামের একজন ফেসবুকে পোস্ট দেখে সজীবকে চিনতে পারেন। তিনি সজীবের কাছে বিষয়টি জানতে চান। সজীব বিষয়টি স্বীকার করেন। বাদল বিষয়টি থানায় জানান। সন্ধ্যায় পুলিশ সজীবের গ্যারেজে গিয়ে টাকা নিয়ে আসে। এ ঘটনায় সেদিনই তাঁকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় এবং এক বস্তা চাল উপহার দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে সজীব সরদার বলেন, ওই দিন তিনি টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেন। এরপরও কেউ না আসায় গ্যারেজে চলে আসেন। পরে বাদলের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে টাকা ফেরত দেন। তিনি আরও বলেন, ‘যে অটোরিকশাটি এখন চালাই, সেটি আমার নিজের। তা ছাড়া এখন শহরে অনেক অটো। করোনার কারণে সারাদিন খেটেও ৩০০-৪০০ টাকার বেশি ওঠে না। চার ভাইবোন ও মা-বাবাকে নিয়ে সংসার কষ্ট করে চালাতে হচ্ছে। এ জন্য আমি একটা চাকরির আশা করেছিলাম। তা হলে আমার অটোটি ভাড়ায় খাটাতে পারতাম। আমার পরিবারের জন্য তা বেশি উপকারে আসত। তবু পুরস্কার তো পুরস্কারই।’